যে কারণে পার্লামেন্ট ভেঙে দিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী

দলের অন্দরেই ভাঙন। ক্রমাগত চাপে এবার সরকার ভাঙলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক সঙ্কট ক্রমেই বেড়েছে। রবিবার সকালে একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। আর তারপরই সরকার ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব দেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। শনিবার দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা বৈঠক করেন তিনি। এরপরই রবিবার সকালে ডাকা হয় মন্ত্রিপরিষদের জরুরি বৈঠক।
এর আগে, গত মঙ্গলবার কন্সটিটিউশনাল কাউন্সিল অ্যাক্ট বা সাংবিধানিক পরিষদীয় আইন সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স জারি করেন ওলি। এবং ওইদিনই সেটা প্রেসিডেন্ট দেবী ভান্ডারীকে দিয়ে স্বাক্ষরও করিয়ে নেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর থেকেই ওই অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের জন্য চাপ বাড়ছিল ওলির উপর। গত ১৫ তারিখ ওই অর্ডিন্যান্স পেশ হয় নেপাল পার্লামেন্টে। এই আইন কন্সটিটিউশনাল কাউন্সিলকে অনুমতি দিচ্ছে, সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেই তারা বৈঠক ডাকতে পারে।
আর ওই আইন পেশ হওয়ার পর ১৫ তারিখ সন্ধ্যাতেই ওলি তার দলের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন। কন্সটিটিউশনাল কাউন্সিলের নেতৃত্বে আছেন প্রধানমন্ত্রী ওলি। এর অন্য সদস্যরা হলেন নেপালের প্রধান বিচারপতি, স্পিকার, জাতীয় অ্যাসেম্বলির চেয়ারপার্সন, বিরোধী দলনেতা এবং ডেপুটি স্পিকার। বিভিন্ন কন্সটিটউশনাল ক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয় এই কাউন্সিল। অভিযোগ, এর ফলে কাউন্সিলের যথেচ্ছাচারে অঙ্কুশ লাগানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে মতবিরোধ শুরু হয়েছে, কারণ নেপালের কন্সটিটউশনে এধরনের কোনও কিছুর উল্লেখ নেই। নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির বর্ষীয়ান নেতা মাধব কুমার নেপাল এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কুমার দাহাল ওরফে প্রচন্ড ওলির এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে ওলি সরকার। তারউপর নিজের দলের মধ্যেও দু’ভাগ হয়ে যাওয়ায় বাড়ছিল চাপ। বিরোধীদের অভিযোগ নিজেকে সর্বময় ব্যক্তিতে পরিণত করতে অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন। তা নিয়ে শাসকদল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরেই বিরোধের মুখে পড়েছিলেন। প্রথম থেকেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল বা প্রচণ্ড এবং মাধব নেপালের নেতৃত্বাধীন শাসক দলের গোষ্ঠীর তরফে সেই বিতর্কিত অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছিল।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক
Comments