পৃথিবীবাসীকে অস্ত্র ফেলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলো 'এলিয়েন'!

 

পৃথিবীবাসীকে অস্ত্র ফেলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলো 'এলিয়েন'!
দ্য হানিংটন ট্রান্সমিটার। ছবি: উইকিপিডিয়া।

'আমি ভ্রিলন বলছি, আস্টার গ্যালাক্টিক কমান্ডের প্রতিনিধি। ... আপনাদের সকল অস্ত্র ফেলে দিন। .. সংঘাতের সময় পার হয়ে গেছে।' ১৯৭৭ সালের ২৬ নভেম্বর এমনই কথা ভেসে এসেছিলো ইংল্যান্ডের 'সাউদার্ন টেলিভিশন' চ্যানেলে। প্রায় ৬ মিনিট ধরে সে সময় কথা বলেছিলেন ভ্রিলন নামের 'এলিয়েন' বা 'ভিনগ্রহের বাসিন্দা'। এরপর দীর্ঘ ৪৩ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে বিষয়টি।

জানা যায়, ১৯৫৮ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডে বেশ জনপ্রিয় ছিলো সাউদার্ন টেলিভিশন চ্যানেল। ১৯৭৭ সালের ২৬ নভেম্বর সেখানে নিয়মিত টেলিভিশন নিউজ শো 'ডে বাই ডে' চলাকালে হঠাৎ করেই টেলিভিশন চ্যানেলটির বদলে অন্য একটি বার্তা সম্প্রচার হয়। যেখানে 'ভ্রিলন' নামের নিয়ে নিজেকে ভিন গ্রহের বাসিন্দা হিসেবে দাবি করেন এক ব্যক্তি। প্রায় ৬ মিনিটের বার্তায় মানব জাতির উন্নয়নের জন্য সকল অস্ত্র ফেলে দেয়ার আহ্বান জানানো হয় এবং একত্রে শান্তিপূর্ণভাবে সহ অবস্থানের কথা বলা হয়। এই বার্তায় ভ্রিলন জানান, পৃথিবী ও তার আসে পাশের সকল গ্যালাক্সিতে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের জন্য এখনই পৃথিবীর সকল অস্ত্র ফেলে দেয়া উচিত।

৬ মিনিটের এই বার্তা প্রচারের পর টেলিভিশন চ্যানেলটির নিয়মিত অনুষ্ঠান 'লুনি টুনস' কার্টুন সম্প্রচার শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ তদন্তের পরও খুঁজে পাওয়া যায়নি কে বা কারা এই ট্রান্সমিশন করেছিলো। অবশ্য ট্রান্সমিশনটি কোন এলিয়েনের নয়, বরং মানুষের বলে জানায় তদন্ত কর্মকর্তারা। তদন্তে জানানো হয়, কে বা কারা টেলিভিশন চ্যানেলটির ট্রান্সমিশন সেন্টারের কাছাকাছি এসে টেলিভিশন ট্রান্সমিশনের বদলে নিজেদের বার্তা প্রচার করেছে। বিষয়টি নিয়ে বিচলিত হবার কিছু নেই।

কিন্তু তারপরও এই সম্প্রচার হওয়ার পর থেকে দর্শকদের ফোন কলে বিপর্যস্ত হতে হয় টেলিভিশন চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে। তদন্তকারী কর্মকর্তারা বিষয়টিকে 'ভিনগ্রহবাসীর বার্তা নয়' বলে জানালেও অনেকে এখনো বিশ্বাস করেন বার্তাটি সম্প্রচার হয়েছে পৃথিবীর বাহির থেকে। কিন্তু সরকারি প্রোপাগান্ডার কারণে তা ভিন্নভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

নাসার মহাকাশযান 'কিউরিসিটি রোভার' ২০১৭ সালে বেশ কিছু ছবি পাঠালে তা নিয়েও ছিলো বেশ আলোচনা পর্যালোচনা। সেখানে কখনো নারী মূর্তির অবয়ব, আবার কখনোবা জীবন্ত কাঁকড়া খুঁজে পাওয়া গেছে বলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কোনটিই হয়নি।

এদিকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে নিজের বাড়ির সামনে সচক্ষে 'এলিয়েন' দেখতে পেয়েছে দাবি করে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দফতরে মেইল করেন এক ব্যক্তি। পরবর্তীতে অবশ্য জানা যায়, মস্তিষ্কে আঘাত লাগার কারণে বর্তমানে পাগল প্রায় সেই ব্যক্তি।

তবে ভিনগ্রহের প্রাণীর খোঁজ এখনো করে চলছে মানুষ। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট (ইউএফও)-র খোঁজে একটি ইউনিট তৈরির কথা ভাবছে। শুধু তাই নয়, একদল বিজ্ঞানী মনে করছেন, এরই মধ্যে পৃথিবীতে এসে ঘুরে গেছে কিছু এলিয়ান এবং অনেকেই পৃথিবীতে বসবাস শুরু করেছে। কিন্তু তাদের অদ্ভুত আকৃতির জন্য মানুষ দেখতে পায় না।

বিষয় যেটাই হোক না কেনো, সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ বিশ্বাস করে সৃষ্টি জগতে সে একা নয়। আর গণিতের 'প্রবাবলিটি' সূত্র অনুসারেও মহাশূন্যে কমপক্ষে কয়েক হাজার গ্রহে কয়েক কোটি প্রাণের বিকাশ লাভ করার কথা। কিন্তু শতকোটি আলোকবর্ষ দূরের সেই গ্রহের প্রাণীর সঙ্গে আমাদের দেখা হবে কবে, তা জানা নেই কারো।

ইত্তেফাক/আরএ

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা