অস্বাভাবিক দ্রুততায় তৈরি হচ্ছে করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক

ছবি: সংগৃহীত
চীনসহ অনেক দেশে ভয়াবহ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। এই রোগের কোনো আরোগ্য নেই, নেই কোনো প্রতিষেধক। এর আগেও অনেক বার এরকম পরিস্থিতিতে পড়েছে বিশ্ব। শুধু গত পাঁচ বছরেই বিশ্বে ইবোলা, জিকা, মার্স নামের আরেক ধরনের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে।
এখন ‘২০১৯ এনকভ’ নামের ভাইরাসের সংক্রমণ শঙ্কায় ফেলেছে সারা বিশ্বকে। এরই মধ্যে এই ভাইরাসে হাজার হাজার মানুষ সংক্রমিত হয়েছে এবং ১৭০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে। আগের রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাগুলোর সঙ্গে যদি তুলনা করা হয়, তাহলে দেখা যায় যে সেসব ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরি করতে বিজ্ঞানীদের কয়েক বছর লেগে গিয়েছিল। তবে এবার ভাইরাসটি চিহ্নিত করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এটি বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের গবেষণা শুরু হয়েছে।চীনের কর্তৃপক্ষ খুব দ্রুত এই ভাইরাসের জেনেটিক কোড ফাঁস করেছে। এর ফলে বিজ্ঞানীরা সহজে ধারণা করতে পেরেছেন এই ভাইরাসটি কোথা থেকে এসেছে, ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটির প্রকোপ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং এই ভাইরাস থেকে মানুষকে কীভাবে রক্ষা করা সম্ভব হবে। বিভিন্ন দেশের সরকারের দ্রুত উদ্যোগের ফলে দ্রুততার সঙ্গে এই ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়েছে। আসন্ন গ্রীষ্মের শুরুতে মানবদেহে প্রতিষেধকের পরীক্ষা শুরু করতে পারবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।
অভূতপূর্ব দ্রুততা: যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ডিয়েগোর ইনোভিয়োস ল্যাবরেটরিতে সম্ভাব্য প্রতিষেধক তৈরির উদ্দেশ্যে বিজ্ঞানীরা অপেক্ষাকৃত নতুন ধরনের ডিএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। প্রতিষেধকটিকে এখন পর্যন্ত বলা হচ্ছে ‘আইএনও-৪৮০০’, যেটি শিগিগরই মানুষের মধ্যে পরীক্ষা করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইনোভিওর গবেষণা বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কেট ব্রোডেরিক বলেন, ‘চীন এই ভাইরাসের ডিএনএ সিকোয়েন্স জানানোর পর আমরা ল্যাবের কম্পিউটারে প্রবেশ করাই এবং তিন ঘণ্টার মধ্যে একটি প্রতিষেধক ডিজাইন করে ফেলেছি। আমাদের প্রতিষেধক ভাইরাসের ডিএনএ সিকোয়েন্স ব্যবহার করে মানবদেহে থাকা ভাইরাসের বিশেষ কিছু অংশে আঘাত করবে। দেহ তখন ঐ ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম হবে।’
ইনোভিও বলছে মানুষের দেহে চালানো পরীক্ষাগুলো যদি সফল হয়, তাহলে আরো বড়ো পরিসরে পরীক্ষা চালানো হবে। আর ঐ পরীক্ষাটি এ বছরের শেষ ভাগে চীনের ভাইরাস আক্রান্ত এলাকায় পরিচালনার পরিকল্পনা করছে সংস্থাটি। পরিকল্পনা যদি সফল হয়, তাহলে এরকম রোগ ছড়ানোর পরিস্থিতিতে সবচেয়ে দ্রুতবেগে প্রতিষেধক তৈরির নজির স্থাপিত হবে।
—বিবিসি

Comments