কাঁটাবনের বাহারি মাছ ও পোষা প্রাণীর মার্কেট

কাঁটাবনের বাহারি মাছ ও পোষা প্রাণীর মার্কেট

রাজধানীতে রয়েছে বাহারি পোষা মাছ ও প্রাণীর মার্কেট। ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয় সংলগ্ন কাঁটাবনের সড়ক দিয়ে চলাচল করলে চোখে পড়ে এসব। শোনা যায় বাহারি রঙিন পাখির কিচির-মিচির কলতান। দেখা যায় নান্দনিক মাছের সমাহার। মনে হবে নানা রকম পশুপাখিতে ভরা একটি বন। আসলে এটি হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটে গড়ে ওঠা পোষা প্রাণীর এক জমজমাট বিক্রয়কেন্দ্র। কাঁটাবন ফিশ অ্যান্ড পেট এনিমেল মার্কেট নামে পরিচিত। চাহিদার বাইরে মানুষের শৌখিনতাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে এ পোষা প্রাণীর বাজার। মার্কেটটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় হওয়ায় যে কেউ অনায়াসে এই মার্কেটে আসতে পারেন। মার্কেটটির পূর্বে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। পশ্চিমে নীলক্ষেত এবং নিউমার্কেট। দক্ষিণে বুয়েট ও পলাশী রোড এবং উত্তরে হাতিরপুল, এলিফ্যান্ট রোড ও শাহবাগ এলাকা। মার্কেটটি কাঁটাবন সিগন্যাল থেকে নীলক্ষেত এবং ধানমন্ডি থানা পর্যন্ত দীর্ঘ।
যা পাওয়া যায় : মানুষের প্রাণী পোষার শখটিকে মাথায় রেখেই এ বাজারে রয়েছে পাখি, মাছ, কুকুর, বিড়াল, খরগোশ, কাছিম থেকে শুরু করে বানর পর্যন্ত। এর মধ্যে দেশি-বিদেশি রয়েছে। এখানে বিড়াল ৫০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা, বিভিন্ন বিদেশি ও শংকর প্রজাতির বিড়ালও পাওয়া যায়। এদের মূল্য ৫,০০০ থেকে ৬০,০০০ এর মধ্যে হয়ে থাকে। তবে লালন-পালন ব্যয় বহুল হওয়ায় বেশি কুকুর বা বিড়াল রাখেন না বলে বিক্রেতারা জানান। দেশি-বিদেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৩০০০ টাকায়, খরগোশ ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রজাতি ও রংভেদে খরগোশ ও গিনিপিগ ২৫০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। বিলাতি ইদুর ৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়, কোয়েল পাখি ৬০ টাকা থেকে ১০০ টাকা। মাছের মধ্যে গোল্ড ফিশ ২০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা। এঞ্জেল ৫০ থেকে ২০০ টাকা। সোর্ড টেইল ৫০ থেকে ১৫০ টাকা। পাপ্পি ৩০ থেকে ১০০ টাকা। প্যারট ফিশ ৩০০ থেকে ২০০০ টাকা। নিওন টেট্রা ৫০ থেকে ৭০ টাকায় পাওয়া যায়। এ ছাড়া কার্ডিনাল ১০০ থেকে ২০০ টাকায়। খার্ফে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। উইজ টেট্রা ৩০ থেকে ৫০ টাকা। টাইগার বার্ফ ২০ থেকে ১০০ টাকা। জাপানি কুইকাপ ২০০ থেকে ৫০০০ টাকা। রেড কার্প ৫০ থেকে ২০০০ টাকা, সিলভার এ্যারোনা ২০০০ থেকে ৫০০০০ টাকায় পাওয়া যায়। এ ছাড়া সাধারণ সামুদ্রিক মাছ ছাড়াও দুর্লভ প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণী যেমন কচ্ছপ, শামুক, কাঁকড়া, তারা মাছ প্রভৃতি পাওয়া যায়। এ বাজারে রংবেরঙের বিভিন্ন মাছের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। বাজারে প্রায় ১০০-১২০ প্রজাতির অলঙ্কারী মাছ রয়েছে। মাছের প্রজাতির মধ্যে রয়েছে গোল্ডফিশ, ফাইটার ফিশ ও রুই কিং ইত্যাদি। ইউনাইটেড পেট অ্যানিমেল নামের প্রতিষ্ঠানের বিক্রেতা সালাম মিয়া জানান, এখানে গোল্ডফিশ ৩০ টাকা জোড়া থেকে শুরু করে এক লাখ টাকার রেড অ্যারোনাও বিক্রয় করা হয়। পাখি প্রজাতির মধ্যে বজরিকা ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা। লাভ বার্ড ১৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা। জাবা স্প্যারো ১৫০০ থেকে ৩০০০০ টাকা। টিয়া ২০০ থেকে ৫০০ টাকা। ময়না ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। কবুতর ২০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা। এ ছাড়া বাহারি রঙিন পাখি যেমন ঘুঘু, মুনিয়া, ময়না, টিয়া, কোয়েল, তোতা কবুতর, হাঁস-মুরগির অসংখ্য প্রজাতি রয়েছে। রয়েছে লক্ষ্যা, সিরাজি, গোলা, গিরিবাজসহ অসংখ্য প্রজাতির কবুতর। এ ছাড়াও ভারতীয় পাখি স্ট্রবেরি, পাকিস্তানি পাখি ককাটেল, ম্যাকাও, গ্রেভার্ডসহ রয়েছে নানা প্রজাতির বিদেশি পাখি। বাংলাদেশ পোষা পাখি বিক্রয় কেন্দ্রের বিক্রেতা জুম্মন মিয়া জানালেন, পাখির মধ্যে সর্বনিম্ন মূল্য রয়েছে মুনিয়া পাখি। দাম জোড়া প্রতি ২৫০ টাকা। আর ম্যাকাও বা গ্রেভার্ডের মতো বিদেশি পাখির মূল্য সবচেয়ে বেশি। যার দাম ২০ লাখ পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ ছাড়া লাভবার্ডের জোড়া ১০০০ থেকে ৩৫,০০০ টাকা। দেশি পাখি বিক্রি করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ হওয়ায় বিদেশি পাখিই বিক্রি করা হয়। মূলত ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও চীন থেকে এসব পাখি আমদানি করা হয়। এখানে দেশি-বিদেশি এবং দুর্লভ প্রজাতির কুকুর পাওয়া যায়। তন্মধ্যে জার্মানি শেফার্ড, স্পেজ, ডোবার মেন, লেভরা ডগ, গোল্ডেন রিট্রিউভার, ডালমাসিয়ান, পার্ক প্রভৃতি অন্যতম। এসবের পাশাপাশি বিদেশি মাছগুলো লালনপালন করার জন্য বিভিন্ন সাইজের ছোট বড় অ্যাকুরিয়াম পাওয়া যায়। অ্যাকুরিয়াম সাজানোর জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, পাথর, অক্সিজেন, শোপিসসহ অন্যান্য সামগ্রী পাওয়া যায়।
Logo of Bangladesh Pratidin

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা