ভাসানচর কতটা বাসযোগ্য, দেখতে আসছে জাতিসংঘ
- Get link
- X
- Other Apps

সরকার শুরু থেকে বলে আসছে, জোর করে কোনো রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠানো হবে না। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যুক্ত করে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার কাজটি করতে চায় সরকার। তবে স্বেচ্ছায় যারা ভাসানচরে যেতে চাইবে, তাদের তালিকা করাসহ অন্যান্য প্রস্তুতির কাজ চলতে থাকবে।
রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তা, সেবার মান উন্নত করা, ভাসানচরে স্থানান্তরসহ বিভিন্ন বিষয়ে গত বুধবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গাবিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক। বৈঠকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থার প্রতিনিধিদের পাশাপাশি জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের বিষয়ে শহীদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, নিরাপত্তাসহ রোহিঙ্গাদের থাকার জন্য ভাসানচর কতটা উপযোগী, তা দেখতে জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধিদল ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর সেখানে যাবে। এ ছাড়া কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে টাস্কফোর্সের সভায় পর্যালোচনা হয়েছে।
টাস্কফোর্সের বৈঠকে রোহিঙ্গা শিবিরে মুঠোফোনের তরঙ্গের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের মুঠোফোন প্রতিষ্ঠানগুলোর তরঙ্গ ফোর–জি থেকে নামিয়ে টু–জি করায় শিবিরে রোহিঙ্গাদের মধ্যে মিয়ানমারের মুঠোফোন (সিম) ব্যবহারের হার বাড়ছে। এটি একদিকে সরকারের রাজস্ব ক্ষতির পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে উঠেছে। রোহিঙ্গাদের অনেকে মিয়ানমারের সিম ব্যবহার করায় তাদের গতিবিধি অনুসরণ করা যাচ্ছে না। আবার ওই সিম ব্যবহারের ফলে শিবির এলাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আগাম তথ্য জানতে পারছে মিয়ানমার। তবে টাস্কফোর্সের বৈঠকে মুঠোফোনের তরঙ্গের বিষয়ে শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়টি সুরাহার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও বিটিআরসির মতামত নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, শিবিরে ময়লা পরিষ্কারের কাজটি রোহিঙ্গাদের দিয়ে করানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এ জন্য রোহিঙ্গাদের পারিশ্রমিক হিসেবে নগদ টাকা না দিয়ে অন্য কোনো সুবিধা দেওয়া যায় কি না, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
রোহিঙ্গাদের নগদ পারিশ্রমিক দিতে সমস্যা বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান, রোহিঙ্গাদের আয় থেকে বিভিন্ন খাতে চাঁদা তোলা হয়। ওই অর্থ কোথায় কার কাছে যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে তাদের পারিশ্রমিক নগদ না দেওয়ার বিষয়টি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জোরের সঙ্গে আলোচনায় আসছে।
টাস্কফোর্সের বৈঠকে রোহিঙ্গাদের জন্য আগামী বছরের আর্থিক সহায়তা তহবিল বা ‘যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনা’ (জেআরপি) প্রসঙ্গও এসেছে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা ঢলের পর থেকে তাদের সহায়তার জন্য জাতিসংঘের নেতৃত্বে জেআরপি গঠিত হয়। টাস্কফোর্সের বৈঠকে বাংলাদেশ বলেছে, ২০২০ সালের জেআরপিতে রোহিঙ্গা শিবির ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশাসনিক কাজের খরচের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। রাখাইনের উন্নয়নে কী করা হচ্ছে এবং কোন খাতে কত বরাদ্দ, সেটিও থাকতে হবে। ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের বিষয়টিও স্পষ্ট করে জেআরপিতে উল্লেখ করতে হবে। ২০১৯ সালের জন্য জেআরপিতে ৯৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু পাওয়া গেছে এর ৬৮ শতাংশ।

- Get link
- X
- Other Apps
Comments