মোদি না ইমরান—ট্রাম্পের কাছে কে বড়?

‘হাউডি মোদি!’ অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: এএফপি‘হাউডি মোদি!’ অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: এএফপিএকবার বিষয়টি কল্পনা করে দেখুন তো...আপনার চেয়ে তুলনামূলক বেশি ক্ষমতাধর একজন আপনার সঙ্গে দারুণ বন্ধুত্ব প্রকাশ করছেন। একসঙ্গে এক অনুষ্ঠানে হাত ধরাধরি করে হাঁটছেন। ক্ষমতাবান বন্ধুর এমন আনুকূল্য পেয়ে আপনি বিগলিত। পরদিন দেখলেন, আপনার সেই ক্ষমতাধর বন্ধু আপনার ‘শত্রু’র সঙ্গে গলা মিলিয়ে বলছেন আমরা ‘দারুণ বন্ধু’।

এমন বিদঘুটে চিত্র ভাবতেই হয়তো আপনার কষ্ট হচ্ছে। হয়তো আপনার শত্রুর সঙ্গে বন্ধুত্ব দেখানো বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কই শেষ করে দেবেন। তবে বাস্তবে যা সম্ভব, রাজনীতিতে তা অত সহজ না—তার বড় উদাহরণ এখন বিশ্ববাসীর সামনে।
ট্রাম্প-মোদি আর ট্রাম্প-ইমরান এখন সেই উদাহরণ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ভারত নাকি পাকিস্তান, কোন দেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক বেশি ভালো, তা নিয়ে চলছে টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুদ্ধ। ভারত ও পাকিস্তানের লোকজন সেই যুদ্ধে শামিল হয়ে একে অপরকে ঘায়েল করে জয়ী হতে চাইছেন। বিপরীতমুখী চেহারা দেখানো সেই বন্ধু বড়ই ক্ষমতাধর, তাই উগরে ফেলাও কঠিন। এর চেয়ে ভালো বাগ্‌যুদ্ধ।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপিপাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপিজাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে ভারত ও পাকিস্তানের দুই প্রধানমন্ত্রীই এখন যুক্তরাষ্ট্রে।
বিবিসি অনলাইনে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ভারতের বিজেপি সমর্থকেরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছিলেন ‘হাউডি মোদি!’ অনুষ্ঠান দেখে। কোনো বিদেশি অতিথির সম্মানে যুক্তরাষ্ট্রে এত বড় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের ঘটনা বিরল। গত রোববার টেক্সাসে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ সমবেত হয়েছিল। একই মঞ্চে হাত ধরাধরি করে হেঁটেছিলেন ট্রাম্প ও মোদি। ট্রাম্পের উপস্থিতিতে মোদি যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ওপর জঙ্গি হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে বক্তব্য দেন।
টুইটারে এমন ব্যঙ্গাত্মক চিত্র ঘুরছে।টুইটারে এমন ব্যঙ্গাত্মক চিত্র ঘুরছে।এই সমাবেশকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের আরেকটি জয় হিসেবেই দেখেছিল ভারতীয়রা। এ ঘটনায় ইমরান খানের হতাশার ব্যঙ্গাত্মক চিত্র ব্যাপকভাবে শেয়ার করে ভারতীয়রা। এটাকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ‘আরেকটি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ বলেও মন্তব্য করেন অনেকে। আর পাকিস্তানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা এর প্রতিক্রিয়ায় ইমরান খানের প্রশংসাসূচক নানা পোস্ট দিতে থাকেন।

বিবিসি বলছে, কিন্তু এক দিন পরই দৃশ্যপট বদলে যায়। নিজেকে পাকিস্তানের ‘বন্ধু’ বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তিনি মহৎ নেতা বলেও আখ্যায়িত করেন। এমনও বলেছেন, তাঁর অনেক পাকিস্তানি বন্ধু রয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মোদির মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সরাসরি উত্তর এড়িয়ে তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে ইরান ‘বিশ্বের এক নম্বর সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’।

বলা বাহুল্য যে ট্রাম্পের এই মন্তব্যে অনেক ভারতীয় অবাক হয়েছেন। সে চিত্র ফুটে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের প্রতিক্রিয়ায়।
এই পরিস্থিতির মধ্যে একটিই প্রশ্ন করার থাকে, তা হলো দুই নেতার সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক থেকে আসলে কী বোঝা যায়?
ভারতের সাংবাদিক মাহা সিদ্দিকি টুইট করেছেন, ট্রাম্প স্পষ্টত ভারত ও পাকিস্তানকে পৃথকভাবে তাই বলছেন, যা তারা শুনতে চায়। ট্রাম্প এখন আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনী এবং মার্কিন স্বার্থের ওপর আলোকপাত করছেন।
আরেক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সম্পাদক শেখর গুপ্ত বিবিসিকে বলেন, ‘ট্রাম্প ট্রাম্পই...তিনি ভারতের কাছ থেকে বাণিজ্য চান এবং আফগানিস্তানে পাকিস্তানের সাহায্য চান। এর পাশাপাশি অবশ্যই তিনি নোবেলও চান। তিনি কোনো দেশ বা নেতাকে পাত্তা দেন না। সেখানে দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে অবস্থান স্পষ্ট করা আছে। আমি মনে করি, ভারত বা মোদি তা মেনে নেবেন।’ 
প্রথম আলো

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা