তালেবান কী করবে এখন?
- Get link
- X
- Other Apps

হালের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যা–ও বা আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিলেন, তা–ও গেল ভেস্তে! সাংবাদিকদের বলেছেন, ওই আলোচনা এখন মৃত। তালেবানের সাম্প্রতিক হামলায় মত বদলেছেন। পানি তাহলে কোন দিকে গড়াচ্ছে?
তালেবানের উত্থান ও শাসন
আফগানিস্তান একটি যুদ্ধপীড়িত দেশ। ২০০১ সালের ইঙ্গো-মার্কিন সামরিক অভিযানের আগে সে দেশে প্রায় ২০ বছর অবিরাম যুদ্ধ চলেছে।
আফগানিস্তান একটি যুদ্ধপীড়িত দেশ। ২০০১ সালের ইঙ্গো-মার্কিন সামরিক অভিযানের আগে সে দেশে প্রায় ২০ বছর অবিরাম যুদ্ধ চলেছে।
১৯৭৮ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আফগান কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় আসে। তাদের সহযোগিতা করার নামে তৎকালীন সোভিয়েত সেনারা পরের বছর আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালায়। আফগান মুজাহিদরা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, চীন, পাকিস্তানসহ আরও কিছু দেশ তাদের সমর্থন দিয়ে যায়। প্রায় এক দশক অবস্থান করে সোভিয়েত সেনারা ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
১৯৮৯ সালে সোভিয়েত সেনারা ফিরে গেলে আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। চারদিকে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। যুদ্ধবাজ বিভিন্ন নেতার আবির্ভাব ঘটে। তাঁরা নিজ নিজ আধিপত্য বিস্তারে সক্রিয় হন। ঠিক এ সময় তালেবানের উত্থান ঘটে। পশতু ভাষায় তালেবান অর্থ ‘শিক্ষার্থী’।
১৯৯৪ সালে পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত ও দক্ষিণ-পশ্চিম আফগান সীমান্তে তালেবানের বেশ তৎপরতা দেখা যায়। আফগানদের কাছে তারা নতুন বার্তা নিয়ে হাজির হয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও নিরাপত্তার উন্নয়নের অঙ্গীকার ছিল তাদের। যুদ্ধবাজ মুজাহিদদের অন্তর্দ্বন্দ্ব ও বাড়াবাড়িতে আফগান অনেকেই তখন অতিষ্ঠ। সে সময় তালেবানের এই অঙ্গীকার তাদের মধ্যে আশার আলো ছড়ায়।
ধারণা করা হয়, আফগানিস্তানে সৌদি অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালেবান প্রথম তাদের কাজ শুরু করে। ইসলামি শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠায় এগোতে থাকে তারা।
১৯৯৬ সালে রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে দেশের বেশির ভাগ এলাকা তাদের শাসনাধীনে চলে আসে। তারা যে আইন চালু করে, এর মধ্যে রয়েছে পুরুষদের অবশ্যই দাড়ি রাখতে হবে। নারীকে আপাদমস্তক ঢাকা থাকতে হবে বোরকায়। একই সঙ্গে তারা বিভিন্ন অপরাধের জন্য শরিয়া আইন অনুযায়ী শাস্তি চালু করে।
বিবিসির তথ্যমতে, উগ্রপন্থী সংগঠন আল কায়েদাকে আশ্রয় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চক্ষুশূল হয় তালেবান। তাদের জন্য তারা বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করে।
যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান সংঘাত যেভাবে শুরু
২০০১ সালে ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয়। এটি ৯/১১ হামলা বলে পরিচিত। নিউইয়র্কের বিখ্যাত টুইন টাওয়ারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় একাধিক হামলার ঘটনায় প্রায় তিন হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটে।
এ হামলার জন্য আল কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র। লাদেনের খোঁজে হন্যে হয়ে ওঠে তারা। তিনি তখন আফগানিস্তানে তালেবানের নিরাপদ আশ্রয়ে। তালেবান তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়। ৯/১১-এর এক মাস পর, ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালাতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ব্রিটেনসহ পশ্চিমা মিত্ররা এ হামলায় সহযোগিতা করে।
শিগগিরই ক্ষমতা হারায় তালেবান। তবে তারা একেবারে অদৃশ্য হয়ে যায়নি। একের পর এক আত্মঘাতী হামলা চালাতে থাকে।
এ অভিযান সম্পর্কে তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেছিলেন, ‘এ অভিযান চালাতে কেউ আমাদের কিছু বলেনি। আফগানিস্তানকে যে সন্ত্রাসের ভূমি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা ভন্ডুল করা এবং তালেবান শাসকের সামরিক সক্ষমতা নির্মূলে এ অভিযান চলছে। তবে আমরা এ দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করে ছাড়ব।’
মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক অভিযানের প্রথম লক্ষ্যবস্তু ছিল তালেবানের সামরিক স্থাপনা ও আল কায়েদার প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলো।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের টানা দুই মাসের অভিযানে তালেবানের পতন ঘটে। বেশির ভাগ তালেবান যোদ্ধা সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে চলে যায়।

২০১৪ সাল ছিল সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী বছর। এ বছর ন্যাটো বাহিনীর বহু সেনার প্রাণহানি ঘটে। তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে লক্ষ্যহীনভাবে পড়ে থাকার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তালেবানের সঙ্গে লড়ার দায়িত্ব আফগান সেনাদের হাতে ছেড়ে দিয়ে চলে যায় তারা। এতে বরং তালেবানেরই সুবিধাই হয়। সরকারি ও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আত্মঘাতী হামলা বাড়ায় তালেবান। একের পর এক বিভিন্ন এলাকা দখল করতে থাকে। গত বছর বিবিসির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আফগানিস্তানের প্রায় ৭০ ভাগ এলাকায় এখন প্রকাশ্যে সক্রিয় তালেবান।
মার্কিন অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার কারণ
যুক্তরাষ্ট্র আফগান পরিস্থিতি যতটা সহজে নিয়ন্ত্রণ করবে বলে ভেবেছিল, বাস্তবে তা হয়নি। এর জের এখনো চলছে। প্রায় ১৮ বছর ধরে সে দেশে মার্কিন সেনাদের অবস্থানের কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বিশ্লেষকেরা বলেছেন, তালেবানের প্রবল প্রতিরোধ, সরকার পরিচালনায় সুষ্ঠুতার অভাব ও আফগান বাহিনীর সীমাবদ্ধতা, আফগান সরকারকে সামরিক সহায়তায় অন্যান্য দেশের অনাগ্রহ—এসব কারণে মার্কিন সেনাদের অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র আফগান পরিস্থিতি যতটা সহজে নিয়ন্ত্রণ করবে বলে ভেবেছিল, বাস্তবে তা হয়নি। এর জের এখনো চলছে। প্রায় ১৮ বছর ধরে সে দেশে মার্কিন সেনাদের অবস্থানের কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বিশ্লেষকেরা বলেছেন, তালেবানের প্রবল প্রতিরোধ, সরকার পরিচালনায় সুষ্ঠুতার অভাব ও আফগান বাহিনীর সীমাবদ্ধতা, আফগান সরকারকে সামরিক সহায়তায় অন্যান্য দেশের অনাগ্রহ—এসব কারণে মার্কিন সেনাদের অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে গত দেড় যুগে তালেবান অবিচলভাবে তাদের শক্তি বাড়িয়েছে। ২০০৯ সালে তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাসংখ্যা বাড়িয়ে এক লাখে নিয়ে যান। আফগান মাটিতে সর্বোচ্চসংখ্যক সেনা নিয়ে মার্কিন অভিযান শুরু হয়। এতে দক্ষিণাঞ্চলের কিছু এলাকা থেকে তালেবান যোদ্ধাদের হটানো গেলেও একেবারে নিশ্চিহ্ন করা যায়নি।
বিরূপ পরিবেশ ও বিপুল ব্যয়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের এই বিপুল অভিযান বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। ফলে তালেবান পুনরায় সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পেয়ে যায়। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক সেনারা সরে গেলে যুদ্ধ পরিচালনার পুরো ভার পড়ে আফগান বাহিনীর ওপর। আফগান সরকারে কর্মকর্তারা নানা জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি। কাজেই সরকারে নানাজনের নানা মত। সে অনুযায়ী আফগান বাহিনীর মধ্যে একক শক্তির অভাব দেখা দেয়। এতে তালেবানের আরও শক্তি বেড়ে যায়। সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বাহুবলের বাইরে অর্থবিত্তেও তালেবান এখন কম নয়।
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, তালেবানের বার্ষিক আয় এখন ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার। মাদকদ্রব্যের উৎস পপি ফুল সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় আফগানিস্তানে। তালেবান–নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এই ফুলের চাষ হয়ে থাকে। অর্থের বিনিময়ে নিজ এলাকায় লোকজনকে ভ্রমণের সুযোগ দিয়ে বিপুল আয় করে থাকে তালেবান। তাদের আছে টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও খনিজ পদার্থের ব্যবসা। সব মিলিয়ে মজবুত অবস্থান।
এমন পরিস্থিতিতে অভিযানের পুরো দায়িত্ব আফগান বাহিনীর ওপর ছেড়ে দিয়ে মার্কিন সেনারা যে ফিরে যাবে, সে ভরসা পাচ্ছে না তারা।

আফগানিস্তানে ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কত সেনা ও বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে, এ ব্যাপারে সঠিক তথ্য পাওয়া মুশকিল। দীর্ঘদিন ধরেই এ ব্যাপারে বিশদ কোনো তথ্য প্রকাশিত হয় না।
তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বলেছেন, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর ৪৫ হাজার সদস্য নিহত হয়েছেন। ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন অভিযান শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত জোট বাহিনীর ৩ হাজার ৫০০ সেনা নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৩০০ মার্কিন সেনা।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আফগান যুদ্ধে ৩২ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে। দ্য ওয়াটসন ইনস্টিটিউট অ্যাট ব্রাউন ইউনিভার্সিটির তথ্যমতে, এই যুদ্ধে প্রতিপক্ষের ৪২ হাজারের বেশি তালিবান যোদ্ধা নিহত হয়।
নিজ নিজ অবস্থান
আফগান যুদ্ধের ১৮ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের তিন–তিনজন প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে নীতিনির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। তাঁরা হলেন বুশ, ওবামা ও ট্রাম্প।
আফগান যুদ্ধের ১৮ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের তিন–তিনজন প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে নীতিনির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। তাঁরা হলেন বুশ, ওবামা ও ট্রাম্প।
২০১৬ সালে নির্বাচনী প্রচারের সময় ট্রাম্প অঙ্গীকার করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট হলে তিনি আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সব সরিয়ে নেবেন। কিন্তু আফগানিস্তানে এখনো প্রায় ১৪ হাজার মার্কিন সেনা সদস্য রয়েছেন। তাঁরা দেখেশুনে তালেবানের বিভিন্ন ঘাঁটি ও শিবিরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পশ্চিমা বিশ্লেষকেরা মনে করেন, আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা সরিয়ে নিলে তালেবান সহজেই দেশের পুরো নিয়ন্ত্রণ নেবে। পরে দেশটি পশ্চিমা দেশগুলোতে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর ষড়যন্ত্রের মন্ত্রণাকক্ষে পরিণত হবে।
তালেবানও চাইছে মুখোমুখি আলোচনার মাধ্যমে যদি আপস করা যায়, তাহলে আবার ক্ষমতায় আসার পথ হয়তো করা যাবে। এ ব্যাপারে কিছু শর্ত মানতেও রাজি তারা। দুই পক্ষের এই আপসকামী মনোভাবের কারণে পরবর্তী সময়ে শান্তিচুক্তির আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি হয়।
বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের দাউদ আজামির মতে, আফগানিস্তানে এখনো যুদ্ধ স্থায়ী হওয়ার মূল কারণ পাঁচটি। প্রথমত, আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযান চলার পর থেকে সেখানে রাজনৈতিক স্পষ্টতার অভাব; দ্বিতীয়ত, ১৮ বছর ধরে সেখানে মার্কিন কৌশলের অকার্যকারিতা; তৃতীয়ত, দুই পক্ষের কারণে সৃষ্ট অচলাবস্থা এবং সমঝোতা আলোচনায় আফগান তালেবানের অধিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা; চতুর্থত, আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের সহিংসতা বৃদ্ধি এবং পঞ্চমত, সাম্প্রতিককালে রক্তক্ষয়ী বড় ধরনের হামলা বৃদ্ধি।
আফগানিস্তানে চলমান অস্থিতিশীলতার জন্য প্রতিবেশী পাকিস্তানকেও দায়ী করা হয়। সেখানে তালেবানের শিকড় রয়েছে বলে অভিযোগ। কিন্তু পাকিস্তান বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
শান্তিচুক্তির উদ্যোগ ও সর্বশেষ পরিস্থিতি
আফগানিস্তানে তালেবান যে এখন বেশ মজবুত অবস্থানে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যুক্তরাষ্ট্রও দেখছে যে সেখানে পড়ে থেকে লাভ নেই। তালেবানের শক্তি অফুরান। মাঝখান থেকে বৈরী পরিবেশে থেকে মার্কিন সেনারা হাঁপিয়ে উঠছে, ট্রমায় ভুগছে। টাকাও তো কম যাচ্ছে না। সব দিক বিবেচনা করে ট্রাম্প নিজেই তালেবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তির উদ্যোগ নেন।
আফগানিস্তানে তালেবান যে এখন বেশ মজবুত অবস্থানে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যুক্তরাষ্ট্রও দেখছে যে সেখানে পড়ে থেকে লাভ নেই। তালেবানের শক্তি অফুরান। মাঝখান থেকে বৈরী পরিবেশে থেকে মার্কিন সেনারা হাঁপিয়ে উঠছে, ট্রমায় ভুগছে। টাকাও তো কম যাচ্ছে না। সব দিক বিবেচনা করে ট্রাম্প নিজেই তালেবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তির উদ্যোগ নেন।

বর্তমান আফগান সরকারের ওপর আস্থা নেই তালেবানের। এই সরকারকে আমেরিকার পুতুল মনে করে তারা। কাজেই তারা এই সরকারের প্রতিনিধিকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি নয়। যুক্তরাষ্ট্রও মেনে নেয়, প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও তালেবান নেতাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবে।
এ বৈঠকের আগে মূল যে সমঝোতা হয়, তা হলো শান্তিচুক্তি হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তী ২০ সপ্তাহের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে তাদের ৫ হাজার ৪০০ সেনা সরিয়ে নেবে। বিনিময়ে তালেবান আফগানিস্তানকে আর সন্ত্রাসের ভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হতে দেবে না। ঠিক হয় ৮ সেপ্টেম্বর হবে এ বৈঠক।
এই যখন প্রস্তুতি, এমন সময় আফগানিস্তানে একটি হামলার ঘটনা সব ভন্ডুল করে দিল। গত বৃহস্পতিবার কাবুলের সুরক্ষিত কূটনীতিক এলাকায় গাড়িবোমা হামলায় মার্কিন সেনাসহ ১২ জন নিহত হয়। ন্যাটোর অধীনে থাকা রোমানীয় এক সেনাও এ হামলায় মারা যান। তালেবান এ হামলার দায় স্বীকার করার সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্পের মত পাল্টে যায়। শনিবার রাতে এক টুইট বার্তায় এ আলোচনা বাতিলের কথা জানান তিনি।
গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ওই আলোচনার বিষয়টি এখন মৃত। তালেবানও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে বলেন, এটা হলো যুক্তরাষ্ট্রের পরিপক্বতা ও অভিজ্ঞতার অভাব। এ জন্য আমেরিকাকে চরম মূল্য দিতে হবে বলেও হুঁশিয়ার করেছে তালেবান।
তাহলে আপস কি আদৌ হবে না
তালেবান বলেছে, ২৩ সেপ্টেম্বর বর্তমান সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠকে বসবে তারা। সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য এ বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়নি। প্রেসিডেন্ট গনি কাবুলে শুধু বলেছেন, তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসার দীর্ঘদিনের ইচ্ছা তাঁর।
এখন দেখা যাক কী হয়।
তালেবান বলেছে, ২৩ সেপ্টেম্বর বর্তমান সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠকে বসবে তারা। সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য এ বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়নি। প্রেসিডেন্ট গনি কাবুলে শুধু বলেছেন, তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসার দীর্ঘদিনের ইচ্ছা তাঁর।
এখন দেখা যাক কী হয়।

- Get link
- X
- Other Apps
Comments