কপালের ‘লিখন’ নাই!

আফগানিস্তান টেস্ট দলেই আছে দুজন লেগ স্পিনার। অথচ বাংলাদেশ একজন লেগ স্পিনারের সন্ধানে আছে কবে থেকে। দেশের ক্রিকেটে লেগ স্পিনারের খুব অভাব, তা নয়। তবুও কেন তাঁরা উঠে আসতে পারছেন না?
বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে জুবায়ের হোসেন।বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে জুবায়ের হোসেন।জুবায়ের হোসেন সবশেষ ম্যাচ খেলেছেন গত বছরের অক্টোবরে। গত জাতীয় লিগের তিনটি ম্যাচ খেলার পর আর কোনো সুযোগ মেলেনি তাঁর। গত তিন বছরে অবশ্য তাঁর কাছে এটি নিয়মিত ঘটনা। কালেভদ্রেই তাঁর সুযোগ মেলে ঘরোয়া ক্রিকেটের ম্যাচে। তবে জুবায়েরের প্রায়ই ডাক পড়ে জাতীয় দলের অনুশীলনে। প্রতিপক্ষ দলে যদি লেগ স্পিনার থাকে সেটির প্রস্তুতি সারতে জুবায়েরের যেন বিকল্প নেই! কিন্তু জাতীয় দলে খেলার সুযোগটা অন্তত এখনকার দৃশ্যপটে লিখন ডাকনামের এই স্পিনারের কপালেই নেই!

এখন যেমন জুবায়েরকে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে। আফগানিস্তান দলে দুজন দুর্দান্ত লেগ স্পিনার আছেন। রশিদ খান আর কায়েস আহমেদকে খেলার প্রস্তুতি মুশফিক-সাকিবরা সারছেন জুবায়েরকে দিয়ে। নেটে যাঁর এত কদর, তিনি কেন পর্যাপ্ত ম্যাচ খেলার সুযোগ পান না? প্রশ্নটা কাল একাধিকবার শুনতে হলো নির্বাচকদের। দুই নির্বাচকের অভিন্ন দাবি, ‘আমাদের একজন লেগ স্পিনার খুব দরকার। ওকে কেন অবহেলা করব? যত জায়গায় পারা যায় তাকে সুযোগ করে দেওয়া হয়। জায়গাটা পোক্ত তাকেই করে নিতে হবে।’

বিসিবির হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) তো আছেই। ‘এ’ দলেও কখনো কখনো জুবায়েরকে দেখা গেছে। কিন্তু ম্যাচ খেলা হয় না তাঁর পর্যাপ্ত। জুবায়েরকে রাখা হয়েছে ১ ও ২ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুদিনের ম্যাচেও। কিন্তু ম্যাচ খেলার তিনি কতটা সুযোগ পাবেন, সেটি নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
সামগ্রিক টেস্ট ক্যারিয়ার
ম্যাচ
মেড.
রান
উই.
ইনিংস সেরা
ম্যাচ সেরা
গড়
স্ট্রাইক
১০
৪৯৩
১৬
৫/৯৬
৭/১৫২
৩০.৮১
৪৪.৬
ইনিংস-বাই-ইনিংস বোলিং
ওভার
মেড.
রান
উই.
ইকো.
প্রতিপক্ষ
ভেন্যু
সাল
১৫.০
৫৮
৩.৮৬
জিম্বাবুয়ে
ঢাকা
২০১৪
১.০
৬.০০
জিম্বাবুয়ে
ঢাকা
২০১৪
১৯.০
৬৪
৩.৩৬
জিম্বাবুয়ে
খুলনা
২০১৪
১০.০
৪২
৪.২০
জিম্বাবুয়ে
খুলনা
২০১৪
২০.০
৯৬
৪.৮০
জিম্বাবুয়ে
চট্টগ্রাম
২০১৪
১৯.০
৫৬
২.৯৪
জিম্বাবুয়ে
চট্টগ্রাম
২০১৪
১৯.০
১১৩
৫.৯৪
ভারত
ফতুল্লা
২০১৫
১৪.০
৫৩
৩.৭৮
দ. আফ্রিকা
চট্টগ্রাম
২০১৫
২.১
২.৩০
দ. আফ্রিকা
চট্টগ্রাম
২০১৫
বাংলাদেশ দলে একজন লেগ স্পিনারের শূন্যতা অনুভব হচ্ছে সেই কবে থেকে। কবে এই শূন্যতা পূরণ হবে, সেটি নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই। শূন্যতা পূরণের যে উদ্যোগ নেওয়া দরকার সেটি কি যথেষ্ট? আফগানিস্তানে দলে যেখানে একাধিক লেগ স্পিনার, টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর বাংলাদেশ দলে ১৯ বছরেও একজন রিস্ট স্পিনার থিতু হতে পারেননি। কেন পারেননি, এ প্রশ্নে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বলেন, ‘সংস্কৃতি। আমাদের যে ক্রিকেট সংস্কৃতি এখানে লেগ স্পিনারদের পরিচর্যা ঠিকমতো হয় না।’ সেই পরিচর্যাটা কীভাবে হবে, সেটি কদিন আগে বলছিলেন বিসিবির হাইপারফরম্যান্স দলের সিনিয়র কোচ ওয়াহিদুল গণি, ‘প্রচুর ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দিতে হবে। এই সুযোগটাই যে লেগ স্পিনাররা ঠিকঠাক পায় না। কেউ ঝুঁকি নিতে চায় না।’
একজন লেগ স্পিনার যেমন ব্যয়বহুল হতে পারেন, আবার তিনি একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু এই ঝুঁকিটাই যে নিতে চায় না কেউ। ব্যয়বহুল হবে এই ভয়ে লেগ স্পিনারকে একাদশে সুযোগ দিতে চায় না ক্লাব কিংবা ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের বেশিরভাগ দল। বিসিএলে বিসিবির টাকায় চালিত একটি দল আছে। সেই দলেও যখন লেগ স্পিনার উপেক্ষিত থাকেন, তবে কী করে আশা করা যায় যে এ দেশেও একজন রশিদ খান পাওয়া যাবে!
লেগ স্পিনারের হাহাকার দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেছিলেন জুবায়ের। নির্বাচক হাবিবুল মনে করেন, এত দ্রুত না এনে যদি জুবায়েরকে আরও কদিন পরে নিয়ে আসা যেত, তবে সে আরও পরিণত হতো। দ্রুত হারিয়ে যেত না। তিনি আশাবাদী, জুবায়েরের মতো লেগ স্পিনারের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি এখনো, ‘লেগ স্পিনার তৈরিই হয় খেলে খেলে। ওর যদি অভিষেক আরও দুই বছর পরে হতো তাহলে এখন সে আরও ভালো অবস্থানে থাকতে পারত। তবে সে আমাদের দৃষ্টি সীমাতেই আছে।’
প্রথম আলো

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা