মিজোরামে ভোট বর্জনের ডাক

ত্রিপুরায় ২২ বছর ধরে বসবাস করছে মিজোরামের বাস্তুচ্যুত ব্রু বা রিয়াংরা। ছবি: ইনসাইড এনইয়ের সৌজন্যেত্রিপুরায় ২২ বছর ধরে বসবাস করছে মিজোরামের বাস্তুচ্যুত ব্রু বা রিয়াংরা। ছবি: ইনসাইড এনইয়ের সৌজন্যেভারতের মিজোরাম রাজ্যে ভোট বর্জনের ডাক দিল সেখানকার শক্তিশালী এনজিওগুলোর কো-অর্ডিনেশন কমিটি। একই সঙ্গে ৮ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজ্যে হরতাল পালনেরও হুমকি দিয়েছে তারা। ভারতের লোকসভা ভোটের এই সময়ে উত্তর–পূর্বাঞ্চলের আরেক রাজ্য মণিপুরেও আজ বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট।
ছোট্ট পাহাড়ি রাজ্য মিজোরাম। খ্রিষ্টান অধ্যুষিত রাজ্যটিতে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা এনজিও বেশ শক্তিশালী। প্রতিটি রাজনৈতিক দলে তাদেরই প্রতিপত্তি সবচেয়ে বেশি।
এই এনজিওগুলোর সমন্বয় সমিতি গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকে ঠিক করেছে, আসন্ন লোকসভা ভোট তারা বয়কট করবে। শুধু তা–ই নয়, ৮ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য মিজোরাম বন্‌ধেরও ডাক দেওয়া হয়েছে।
এনজিও কো-অর্ডিনেশন কমিটির চেয়ারম্যান ভানুলাল রুয়াতার দাবি, ত্রিপুরায় আশ্রিত মিজোরামের বাস্তুচ্যুত রিয়াং বা ব্রুদের জন্য আলাদা ভোটদান কেন্দ্র করা চলবে না। তাদের নিজ নিজ বুথে গিয়েই ভোট দিতে হবে বলে দাবি তোলা হয়। 
মিজো অধ্যুষিত রাজ্যটির রিয়াং সম্প্রদায়ের মানুষেরা ২২ বছর ধরে ত্রিপুরায় বসবাস করতে বাধ্য হয়েছেন। মিজোরামে সংঘর্ষের জেরে তাঁরা পালিয়ে আসেন ত্রিপুরায়। ভারত সরকার এই বাস্তুচ্যুতদের জন্য প্রয়োজনীয় রেশনের ব্যবস্থা করছে।
ত্রিপুরায় মোট ছয়টি শিবিরে ৩৫ হাজার ব্রু বসবাস করে। তাদের মধ্যে ভোটার আছেন ১২ হাজার। ব্রুদের ৫২ শতাংশ সেই নির্বাচনে অংশ নেন।
২০১৮ সালের মিজোরাম বিধানসভা নির্বাচনে এই ব্রু-রা মিজোরামে গিয়েই ভোট দিয়ে আসেন। বিভিন্ন সাধারণ বুথেই নির্পাত্তা বাহিনীর উপস্থিতিতে তাঁরা ভোট দেন। এবার ভারতীয় নির্বাচন কমিশন তাঁদের জন্য ১৫টি বিশেষ বুথ গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এতেই ক্ষিপ্ত সংখ্যাগুরু মিজোরা। তাঁদের দাবি, বিশেষ বুথ করা চলবে না। তাই মঙ্গলবার তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভোট বয়কট করা হবে।
ভানুলাল জানান, মিজোরা কেউ ভোটের ডিউটি করবেন না। বেসরকারি গাড়িকেও ভোটের কাজে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। অর্থাৎ, নির্বাচনে কোনো ধরনেরই সহযোগিতা করা হবে না। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য ৭ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
এনজিও কো-অর্ডিনেশন কমিটির দাবি, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে যদি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হয় তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য হরতালে যাবে তারা। তবে রাজ্যে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আশি কুন্দ্রা এনজিওগুলোকে তাঁদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছেন বলে জানা গেছে।
এনজিওগুলো এখনো কড়া অবস্থান নিয়ে চলেছে। এখন দেখার শেষমেশ ব্রুদের নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
পাশের রাজ্য মণিপুরে আজ ভারতীয় সময় সকাল ছয়টা থেকে শুরু হয়েছে ৪৮ ঘণ্টার বন্‌ধ্‌। বন্‌ধের ডাক দিয়েছে মণিপুরের যৌথ সংগ্রাম সমিতি।
সম্প্রতি পুলিশি হেফাজতেই মঞ্জুর আহমেদ নামের এক পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে বন্‌ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। বন্‌ধের জেরে সকাল থেকেই বিঘ্নিত মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের স্বাভাবিক জনজীবন।
মিজোরামের মতো মণিপুরেও ১১ এপ্রিল শুরু হচ্ছে লোকসভার ভোট। মিজোরামে এক দিনে শেষ হলেও মণিপুরে অবশ্য ১৮ এপ্রিলও ভোট আছে। ভোটের আগে হরতাল আর হরতালের হুমকির জেরে জেরবার প্রশাসন।
প্রথম আলো

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা