মৌচাকে ঘেরা বাড়ি
- Get link
- X
- Other Apps
• বাড়িটির নাম সাঁঝের মায়া কুঞ্জ
• ২০ টির বেশি মৌমাছির চাকে ঘেরা এ বাড়ি
• এক যুগের বেশি সময় ধরে মৌমাছিরা বাড়িটিতে বাসা বেঁধে আসছে
• ২০ টির বেশি মৌমাছির চাকে ঘেরা এ বাড়ি
• এক যুগের বেশি সময় ধরে মৌমাছিরা বাড়িটিতে বাসা বেঁধে আসছে
ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা ওয়াদুদ মুরাদ বাড়িটির মালিক। ২০০৫ সালে তিনি বাড়িটি নির্মাণ করেন। ওই সময় গোয়ালন্দে হাতে গোনা কয়েকটি বহুতল ভবনের মধ্যে এটি ছিল একটি। ২০০৭ সালের ২৪ মার্চ মারা যান ওয়াদুদ মুরাদ। তিনি স্ত্রী ও তিন মেয়ে রেখে যান। তাঁর স্ত্রী ইয়াসমিন মুরাদ গোয়ালন্দ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেবগ্রাম ইউনিয়নের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। বড় মেয়ের ঢাকায় বিয়ে হয়েছে। মেজো মেয়ে ঢাকায় ইডেন মহিলা কলেজের সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী এবং সবার ছোট মেয়ে গোয়ালন্দ শহীদ স্মৃতি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে।
ওই বাড়ি নির্মাণের এক বছর পর থেকে মৌমাছি এসে বাসা বাঁধা শুরু করে। এক যুগের বেশি সময় ধরে মৌমাছিরা বাড়িটিতে বাসা বেঁধে আসছে। এই বাড়ির মৌচাক দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসে। প্রধান সড়ক–সংলগ্ন হওয়ায় প্রতিনিয়ত যানবাহনের যাত্রীরা আসা-যাওয়ার সময় দৃষ্টিনন্দন মৌমাছির চাক উপভোগ করে থাকে।
গতকাল শুক্রবার সকালে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তিনতলা ভবনের পূর্ব পাশের কার্নিশ জুড়ে সারিবদ্ধভাবে রয়েছে মৌমাছির চাক। একটি-দুটি নয়, ২০টির মতো। আরও দুই-একটি কয়েক দিন আগে কেটে ফেলা হয়েছে। ভবনের প্রতি তলার বারান্দা ও সিঁড়ির ওপর অনেক মৌমাছি দেখা গেল। জানালার ফাঁকা স্থান দিয়ে ঘরে আসা–যাওয়া করছে মৌমাছিরা।
নতুন কেউ বাড়িতে এলে তাঁরা ভেতরে যেতে ভয় পায়। ইয়াসমিন মুরাদের অভয় পাওয়ার পর অতিথিরা ভেতরে প্রবেশ করে। ভবনের নিচতলা ও দ্বিতীয় তলা ভাড়া দেওয়া রয়েছে। তিনতলায় বর্তমানে ছোট মেয়েকে নিয়ে বাস করছেন ইয়াসমিন মুরাদ।
ইয়াসমিন মুরাদ বলেন, বাড়ি নির্মাণের পরের বছর পাঁচ-ছয়টি চাক বসেছিল। এখন বাড়তে বাড়তে ২০-২৫টি করে বসে। প্রতিবছর অগ্রহায়ণ মাসের শুরুতে মৌমাছিরা এসে বাসা বাঁধে। চৈত্র মাসের শেষের দিকে মৌমাছিগুলো চলে যায়। বছরের প্রায় পাঁচ মাস মৌমাছিদের অবস্থানকালে পাঁচ থেকে সাতবার মৌয়ালেরা এসে চাক কাটেন। মধু অর্ধেক মৌয়ালেরা নেন এবং অর্ধেক তাঁরা নেন। তাতে একেকবার সাত-আট কেজি করে মধু পান তাঁরা। এত মধু কী করেন জানতে চাইলে বলেন, কখনো তাঁরা বাজারে বা মৌয়ালদের কাছে মধু বিক্রি করেন না। পরিবারের পর আত্মীয়স্বজন এবং সহকর্মীদের দেন। এ ছাড়া আশপাশের এলাকার অনেকে আসেন খাঁটি মধু সংগ্রহ করতে। তাঁদেরও বিনা মূল্যে দিয়ে দেন।
ইয়াসমিন বলেন, ‘এত মৌমাছি থাকলেও আজ পর্যন্ত কখনো আমাদের অত্যাচার করেনি। পরিবারের কাউকে, এমনকি যাঁরা ভাড়া আছেন, তাঁদেরও কামড় দেয়নি। রাতের বেলায় বাতি জ্বললে বাতির নিচে এসে কিছুটা জ্বালাতন করে। তবে এসব দেখতে দেখতে এখন আমাদের সয়ে গেছে। মৌমাছিরা আঘাত না পেলে সহজে কাউকেই কামড় দেয় না।’
প্রতিবেশী ব্যবসায়ী নিকবর আলী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মৌমাছির চাক দেখছি। এখানকার মধু খাঁটি ও সুস্বাদু। এই বাড়িকে সবাই মৌচাক বাড়ি হিসেবেই চেনে। রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকালে অনেকে কৌতূহলবশত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে।’ বাড়ির এক ভাড়াটে বলেন, প্রায় চার বছর ধরে এখানে ভাড়া থাকছেন। কখনোই মৌমাছি তাঁদের কামড় দেয়নি।

- Get link
- X
- Other Apps
Comments