মহাকাশে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অস্ত্র
- Get link
- X
- Other Apps

ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় আকাশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্রে গুলিবর্ষণ করতে দ্বিধা করবে না যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৮ সালের বাজেটে ১৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এখাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়, যা কানাডা বা তুরস্কের মোট প্রতিরক্ষা বাজেটের সমান। ২০০১ সাল থেকে এ নিয়ে বাজেট ১৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছড়িয়েছে। এর কিছুটা খরচ হয়েছে জাহাজভিত্তিক এইজিস ও ভূমিভিত্তিক প্যাট্রিয়ট ও টার্মিনাল হাই অ্যালটিটিউচ এরিয়া ডিফেন্স (থাড) সিস্টেমের জন্য। এগুলো স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্য করে তৈরি। তবে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইলস (আইসিবিএমএস) এর চেয়েও দ্রুতগতিতে আরও উঁচু দিয়ে যেতে পারে।
২০০৪ সালেই জিএমডি প্রস্তুত বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে ২০১৭ সালের আগ পর্যন্ত কোনো আইসিবিএম জাতীয় লক্ষ্যে ও বিশেষ পরিস্থিতিতে তা পরীক্ষা করা হয়নি। পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্রের (ওয়্যারহেড) বিরুদ্ধে চারটি ইন্টারসেপ্টর চালানো হলে তাতে আঘাতের সম্ভাবনা ৯৭ শতাংশ। এটা খুবই আশাব্যঞ্জক।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে যদি একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, তবে তাতে শুধু তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ইন্টারসেপ্টর নষ্ট হবে না, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো শহরে একটি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের ৩০ শতাংশ আঘাত হানার ঝুঁকিও থাকবে।
ট্রাম্প প্রশাসন ইন্টারসেপ্টর বাড়ানোর পাশাপাশি রাডারের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে। কিন্তু নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা পর্যালোচনায় গত নয় বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বাড়তি কিছু ভিত্তিগত প্রস্তাব দেখা গেল।
এর মধ্যে একটি হচ্ছে জিএমডি। এতে কোনো ক্ষেপণাস্ত্রকে ছোড়ার পরপরই তার গতিপ্রাপ্তির দশায় বা বুস্টিং ফেজে গুলি চালালে তার গতি কমে যাবে এবং ছদ্মবেশ খসে পড়বে। তবে বুস্টিং ফেজ মাত্র কয়েক মিনিট স্থায়ী হয় বলে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণস্থল শনাক্ত করে তা ঘোষণা দেওয়া জরুরি বেশি। পরামর্শ হচ্ছে—কমপ্যাক্ট লেজার বা নতুন ইন্টারসেপ্টর মিসাইলে সজ্জিত হয়ে জরুরি মুহূর্তে এফ-৩৫–এর মতো ফাইটার জেট বা ড্রোন শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ দিকে এগিয়ে যাওয়া। তবে তাতে ঝুঁকিও থেকে যায়।
দ্বিতীয় কৌশল—আরও বেশি আন্দাজ করে মহাকাশ থেকে গুলি ছোড়া। গত ডিসেম্বরে ট্রাম্প নতুন স্পেস কমান্ড গঠনের নির্দেশ দেন, যার মাধ্যমে মহাকাশে সামরিক কর্মসূচি চালানো যায়। নতুন স্পেস ফোর্স বা মহাকাশ বাহিনী গড়ে তোলা ও স্পেস ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি তৈরির কাজ চলছে।
পেন্টাগন মহাকাশে সাশ্রয়ী ও ছোট আকারের কৃত্রিম উপগ্রহ রাখতে আগ্রহী, যেগুলো নিম্ন কক্ষপথে থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের তৈরি থেকে ধ্বংস পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করবে। ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার বিষয়টি ধরতে পারার পাশাপাশি ইন্টারসেপ্টর তা ধরতে সক্ষম হয়েছে কি না, তাও স্যাটেলাইটে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এ নিয়ে ছয় মাসের গবেষণা শুরু করা হয়েছে। মহাকাশে রকেট, লেজার বা ইন্টারসেপ্টর রাখার সম্ভাব্যতার বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে।
এখানে বেশ কিছু জিনিস একেবারেই আনকোরা। ২০১০ সালে ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে আকাশ থেকে লেজারের ব্যবহার সফলভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। ওই সময় ওবামা প্রশাসন শত কোটি ডলার স্পেস সেন্সর তৈরির পেছনে খরচ করেছে। কক্ষপথে ঘূর্ণমান লেজার অস্ত্রের ধারণাটি রিগ্যান প্রশাসনের স্ট্র্যাটেজিক ডিফেন্স ইনিশিয়েটিভ থেকে চলে আসছে, যা স্টার ওয়ার্স নামে পরিচিত।
২০১২ সালে ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল এ বিষয়ে বিস্তারিত পদ্ধতি প্রকাশ করে। তারা বলে, বুস্ট ফেজ পর্যায়ের ওই প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে প্রায়োগিক ও ব্যয়সাশ্রয়ী বলা যায় না। রকেট মোটর এত দ্রুত পুড়ে যায় যে ইন্টারসেপ্টরে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কেন্দ্র পর্যন্ত যেতে হতে পারে। এখানেই মহাকাশে স্থাপিত ইন্টারসেপ্টর কাজে আসবে। তবে এর জন্য কোটি কোটি ডলার খরচ করে বিশাল স্যাটেলাইটের বহর তৈরি করতে হবে। তবে পেন্টাগন বলছে, বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত প্রযুক্তি এখন গ্রহণ করলে খরচ অনেকটাই কমে আসবে। তাদের এখনকার কাজ হচ্ছে কংগ্রেসের কাছে বাজেট পেশ করা। তবে ওই বাজেট যেন অসীম হয়ে না দাঁড়ায়।
রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতা?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। গত বছর থেকে রাশিয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের টানাপোড়েন নতুন এক মাত্রা পেয়েছে। এর কারণ হিসেবে রহস্যময় একটি কৃত্রিম উপগ্রহের কথা বলা হয়।
বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ২০১৭ সালের অক্টোবরে উপগ্রহটি মহাকাশে পাঠিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার রহস্যময় ওই স্যাটেলাইটের অস্বাভাবিক আচরণ দেখে যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশে ক্ষমতা বাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাঁর এ মন্তব্য উড়িয়ে দিয়ে বলা হয়েছে, সন্দেহবশত অনুমান করে ভিত্তিহীন ও অপমানজনক অভিযোগ করা হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। গত বছর থেকে রাশিয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের টানাপোড়েন নতুন এক মাত্রা পেয়েছে। এর কারণ হিসেবে রহস্যময় একটি কৃত্রিম উপগ্রহের কথা বলা হয়।
বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ২০১৭ সালের অক্টোবরে উপগ্রহটি মহাকাশে পাঠিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার রহস্যময় ওই স্যাটেলাইটের অস্বাভাবিক আচরণ দেখে যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশে ক্ষমতা বাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাঁর এ মন্তব্য উড়িয়ে দিয়ে বলা হয়েছে, সন্দেহবশত অনুমান করে ভিত্তিহীন ও অপমানজনক অভিযোগ করা হয়েছে।
তবে ওয়াশিংটন বলছে, রাশিয়ার অ্যান্টিস্যাটেলাইট যুদ্ধাস্ত্র তৈরি নিয়ে মারাত্মক উদ্বেগে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক অ্যালেক্সজান্ডার ডেনেকো তাঁর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে একে ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন।
মহাকাশে কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে?
যুক্তরাষ্ট্রের রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিস ইনস্টিটিউট নামের একটি প্রতিষ্ঠানের রিসার্চ অ্যানালিস্ট অ্যালেক্সজান্ডার স্টিকিংসের মতে, মহাকাশে ব্যবহারের জন্য যেসব অস্ত্রের নকশা করা হতে পারে, তার কার্যক্রম প্রচলিত বন্দুক বা অন্যান্য অস্ত্রের চেয়ে আলাদা। এ ধরনের অস্ত্র কক্ষপথে নানা আবর্জনা তৈরি করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিস ইনস্টিটিউট নামের একটি প্রতিষ্ঠানের রিসার্চ অ্যানালিস্ট অ্যালেক্সজান্ডার স্টিকিংসের মতে, মহাকাশে ব্যবহারের জন্য যেসব অস্ত্রের নকশা করা হতে পারে, তার কার্যক্রম প্রচলিত বন্দুক বা অন্যান্য অস্ত্রের চেয়ে আলাদা। এ ধরনের অস্ত্র কক্ষপথে নানা আবর্জনা তৈরি করতে পারে।
মহাকাশ বিশেষজ্ঞের মতে, মহাকাশে ব্যবহৃত অস্ত্রে লেজার বা মাইক্রোওয়েভ ফ্রিকোয়েন্সি যুক্ত থাকতে পারে, যা অন্য কোনো উপগ্রহের কাজ কিছু সময়ের জন্য থামিয়ে দিতে পারে বা কোনো স্যাটেলাইটকে ধ্বংস না করেও অকার্যকর করে তুলতে পারে। এ ছাড়া স্যাটেলাইটের কার্যক্রমে বাধা বা জ্যামিং সৃষ্টি করতে পারে।
স্টিকিংস বলেন, মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহের সক্ষমতার বিষয়টি ক্ল্যাসিফায়েড তথ্য হিসেবে সংরক্ষিত থাকে বলে কোন স্যাটেলাইটে কী প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে, তা জানা কঠিন। কোন দেশ শত্রুতাবশত কোন স্যাটেলাইট অকার্যকর করেছে বা ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কিছু করেছে, তা প্রমাণ করা কঠিন।

- Get link
- X
- Other Apps
Comments