শিশুকন্যা নিয়েই জাতিসংঘের অধিবেশনে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী /আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:০৬
- Get link
- X
- Other Apps

প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ অধিবেশনে কোনো শিশু তাঁর মায়ের সঙ্গে যোগ দিল। শিশুটি আর কেউ নয়, মাত্র তিন মাস আগে জন্ম নেওয়া নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের মেয়ে। জেসিন্ডা আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসে দ্বিতীয় সরকারপ্রধান, যিনি প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মা হয়েছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় প্রথম মা হয়েছিলেন পাকিস্তানের বেনজির ভুট্টো। তবে ভিন্ন রাজনৈতিক পরিবেশের কারণে এক প্রধানমন্ত্রী মা সানন্দে বিশ্ববাসীকে তাঁর মাতৃত্বের সুসংবাদ দিতে পারলেও অপরজনকে তা গোপন রাখতে হয়েছিল।
আজ মঙ্গলবার বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, জেসিন্ডা গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ অধিবেশনে প্রথমবারের মতো ভাষণ দেন। তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি শিশুসন্তান নিয়ে এই অধিবেশনে যোগ দিলেন। ভাষণের আগে তিন মাস বয়সী মেয়ে নেভ তে আরোহার সঙ্গে কিছু সময়ের জন্য আদরে–দুষ্টুমিতে মেতে ছিলেন জেসিন্ডা। ভাষণ দেওয়ার সময় তাঁর সঙ্গী ক্লার্ক গেফোর্ড মেয়েকে কোলে নিয়ে বসে ছিলেন।

কোলের শিশু হলে কী হবে, জাতিসংঘে প্রবেশের জন্য নিয়মকানুন মেনে তাঁর জন্যও পরিচয়পত্র ইস্যু করতে হয়েছে। নেভের বাবা গেফোর্ড মেয়ের ছবি লাগানো জাতিসংঘের সেই পরিচয়পত্রের ছবি এবং জাতিসংঘে মেয়েকে নিয়ে মজার অভিজ্ঞতা টুইটারে দিয়ে লিখেছেন, ‘টুইটারে সবাই নেভের জাতিসংঘের পরিচয়পত্র দেখতে চেয়েছে। এটিই সেটি। আহা, গতকাল নেভের ন্যাপি পাল্টানোর মাঝামাঝি সময়ে সম্মেলন কক্ষে প্রবেশ করা জাপানের প্রতিনিধিদলের অবাক হওয়া চাহনির ছবি যদি তুলতে পারতাম!’

নিউজিল্যান্ডের নিউজহাবকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা বলেছেন, ‘নিউজিল্যান্ডে বেশির ভাগ সময় নেভ আমার সঙ্গে থাকে।’ ছয় সপ্তাহের মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে তিনি কাজে যোগ দিয়েছেন আগস্ট মাসে। সন্তানকে দেখভালের জন্য তাঁর সঙ্গী টেলিভিশন উপস্থাপক গেফোর্ড এখন বাড়িতেই থাকছেন।
নিউজিল্যান্ড হেরার্ল্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ অধিবেশনে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গীর খরচ তিনি বহন করছেন। নেভের দেখভালের জন্যই নেভের বাবাকে সঙ্গে নেওয়া হয়েছে।
আধুনিক ইতিহাসে প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় প্রথম মা হয়েছিলেন পাকিস্তানের বেনজির ভুট্টো। ছবি: এএফপিনিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর মাতৃত্বের বিষয়টি নিজ দেশসহ বিশ্ববাসী স্বাগত জানালেও প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় প্রথম মা বেনজির ভুট্টো এমন অভ্যর্থনা পাননি। দেশটির সামরিক অর্থায়নে পরিচালিত কট্টর ডানপন্থী জোটের কারণে তাঁকে মাতৃত্বের বিষয়টি গোপন রাখতে হয়েছিল। ১৯৯০ সালে তিনি কন্যাসন্তান জন্ম দেন। কখনো তিনি তাঁর এই মা হওয়ার বিষয় প্রকাশ করেননি এবং মাতৃত্বকালীন ছুটিও নেননি। ব্যক্তিগত গাইনি চিকিৎসকের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর তিনি দ্রুত কাজে যোগ দেন। এর কয়েক মাস পর তাঁর সরকারকে বরখাস্ত করেন প্রেসিডেন্ট। তাঁর অন্য দুই সন্তানকেও একই পরিস্থিতির মধ্যে জন্ম নিতে হয়েছিল। বেনজির ভুট্টো দেখিয়েছিলেন, মাতৃত্ব ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই একই সঙ্গে চালানো সম্ভব।

পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বরে বেনজির ভুট্টোর নির্বাচনী সমাবেশের মিছিলে গুলিবর্ষণের পরপর আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়।

- Get link
- X
- Other Apps
Comments