১৭ ঘণ্টা পর কলকাতায় ফিরেছে আসামে আটকে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল

আসামে ১৭ ঘণ্টা আটকে থাকার পর কলকাতায় ফিরেছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল। আজ শুক্রবার সকাল পৌনে আটটায় তাদের বিমানযোগে ফেরত পাঠানো হয়।
আসামের নাগরিক পঞ্জি থেকে বাদ যাওয়া নাগরিকদের কথা শোনার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলকে আসামে পাঠান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানকার শিলচড়ে এই প্রতিনিধিদলের একটি নাগরিক কনভেনশনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু দুপুরে এই প্রতিনিধিদল শিলচর বিমানবন্দরে পৌঁছালে আসাম পুলিশ তাদের আর বিমানবন্দরের বাইরে যেতে দেয়নি। অভিযোগ রয়েছে, বরং আসাম পুলিশ তৃণমূলের এই প্রতিনিধিদলকে হেনস্তা করে, মারধরও করে। রাতে ওই প্রতিনিধিদলকে বিমানবন্দরে আটকে রাখা হয়।
তৃণমূলের এই প্রতিনিধিদলে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পুর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, মমতা বালা ঠাকুর, রত্না দে নাগ, নাদিমুল হক, অর্পিতা ঘোষ এবং বিধায়ক মহুয়া মৈত্র। এর মধ্যে আজ কলকাতায় ফিরেছেন ছয়জন আর অন্য দুজন গিয়েছেন দিল্লিতে।
আসামের নাগরিক পঞ্জি থেকে ৪০ লাখ বাঙালির নাম বাদ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সোমবার আসামে এই নাগরিক পঞ্জি প্রকাশ হওয়ার পর মমতা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা এটা মানছি না। মানব না। একটা রাজ্য থেকে ৪০ লাখ বাঙালিকে বাদ দেবে, এটা মানার কথা নয়। এই ৪০ লাখ নাগরিক কোথায় যাবে? কে তাদের গ্রহণ করবে? কে তাদের খাওয়াবে? যুগ যুগ ধরে আসামে বাস করে এলেও তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা অগণতান্ত্রিক।’ তাই মমতা এই নাগরিক পঞ্জি বাতিলের দাবি করেন।
এরপরই মমতা নাগরিক পঞ্জি থেকে বাদ যাওয়া নাগরিকদের কথা শোনার জন্য ওই প্রতিনিধিদলকে আসামে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।
আজ সকালে কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এই প্রতিনিধিদলের নেতা ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘আসামের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়াতে আমরা গিয়েছিলাম। কিন্তু আসাম সরকার সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিকভাবে আমাদের শিলচর শহর বা গুয়াহাটিতে ঢুকতে দেয়নি। আটকিয়ে রাখে। এটা অন্যায়। দেশের সর্বত্র আমাদের চলার অধিকার থাকলেও আসাম সরকার সেই অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। শুধু বাঙালি নয়, আসামের বহু বিহারি, ওড়িয়া এবং নেপালিদেরও নাগরিক পঞ্জি থেকে নাম বাদ দিয়েছে। এটা মানা যায় না। ভারতবর্ষের সর্বত্র প্রত্যেক নাগরিকের বাস করার অধিকার থাকলেও সেই অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে আসাম সরকার। ১৭ ঘণ্টা পর আমাদের জামিনে ছেড়ে জোর করে বিমানে তুলে দিয়েছে সেখানকার সরকার।’
এদিকে গতকাল কলকাতায় আসামের মতো পশ্চিমবঙ্গেও নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি চালু করার দাবিতে মিছিল বের করে বিজেপির যুব ও নারী মোর্চা। শুধু তা-ই নয়, বিকেলে বিজেপির নেতারা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠির সঙ্গে দেখা করে এই রাজ্যে এনআরসি চালুর দাবি করেন।

এই ঘটনার পর ক্ষুব্ধ মমতা বিজেপিকে এক হাত নেন। তিনি বলেন, ‘ওরা কারা? বাংলার রাজনীতিতে কী গুরুত্ব রয়েছে ওদের। কেউ চেনে না। কয়েকটি গুন্ডার দল। নিজেদের অস্তিত্ব নেই। তারা আবার নাগরিক পঞ্জির দাবি করেছে?’ এরপরই মমতা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, ‘দেখি কীভাবে ওরা বাংলায় নাগরিক পঞ্জি কার্যকর করে?’ মমতা আরও বলেন, ‘এ তো বিজেপির শেষের শুরু। ওরা অবসাদে ভুগছে। চাপে পড়ে গেছে। তাই ওরা পেশিশক্তির আস্ফালন করছে। আর বেশি দিন ক্ষমতায় নেই বিজেপি।’
প্রথম আলো

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা