আতঙ্কে আসামের ৯০ লাখ মুসলমান
আতঙ্কে আছেন আসামে বসবাসকারী ৯০ লাখ মুসলমান। সেখানে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি(এনআরসি) হালনাগাদ করার কাজ শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে চলা এই প্রক্রিয়া আসামে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের নাম তালিকাভুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হবে। এনআরসি’তে বিদেশী হিসেবে চিহ্নিত হলে তাদের ভাগ্যে কি ঘটতে চলেছে সে বিষয়ে কোন ধারণা নেই তাদের। খবর বিবিসি’র।
খবরে বলা হয়, এনআরসি’র কারণেই আসামে বসবাসকারী বাংলাভাষী প্রায় ৯০ লাখ মুসলমান ভীষণ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। সংখ্যাটা মুসলমানদের তুলনায় অনেক কম হলেও বাঙালি হিন্দুদের একটা অংশের মধ্যেও রয়েছে আতঙ্ক।
বর্তমানে আসামের বাংলাভাষী মুসলমানদের মধ্যে যে প্রশ্ন বিরাজ করছে তা হচ্ছে, এনআরসি শেষে যেসব মানুষকে ‘বিদেশি’ বলে চিহ্নিত করা হবে, তাদের ভবিষ্যৎ কী!
ভারত আর বাংলাদেশের মধ্যে যেহেতু বিদেশি বা বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত ব্যক্তিদের ফেরত পাঠানোর কোনো চুক্তি নেই। তাহলে যেসব মানুষ কয়েক প্রজন্ম ধরে ভারতকেই নিজেদের দেশ বলে মনে করে এসেছেন, তাদের নিয়ে কী করা হবে। সরকারের তরফ থেকে এ ব্যাপারে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
ভারত আর বাংলাদেশের মধ্যে ‘বিদেশি’ বলে চিহ্নিত ব্যক্তিদের ফেরত পাঠানোর কোনো চুক্তি নেই
আসামের মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ডিসেম্বর মাসে এনআরসি করার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আসামে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করাই এর উদ্দেশ্য। এদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। বাংলাভাষী হিন্দুরা অসমীয়া মানুষদের সঙ্গেই থাকতে পারবেন।
কেন্দ্রীয় সরকারও প্রত্যেক হিন্দুকে ভারতীয় হওয়ার একটা অধিকার দেওয়ার জন্য বিল পেশ করেছিল। তবে আসামের বেশির ভাগ নাগরিক এর বিরোধিতা করছেন।
যাদের বিদেশি বলে চিহ্নিত করা হবে, তাদের অবস্থাটা কী হতে পারে, তার একটা আন্দাজ আমরা পেতে পারি সেসব মানুষের পরিস্থিতির দিকে তাকালেই, যাদের আসামের বিদেশি ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যেই বিদেশি বলে চিহ্নিত করেছে।
বিদেশি বলে চিহ্নিত এসব মানুষের রাজ্যের বিভিন্ন জেলের মধ্যেই গড়ে তোলা বন্দিশিবিরে রাখা হয়েছে। বেশ কিছু মানুষ তো এমনও রয়েছেন, যারা গত এক দশক ধরে এভাবে বন্দিশিবিরে রয়েছেন। এইসব বন্দিশিবিরগুলোতে মানবাধিকার সংগঠন বা মানবাধিকার কর্মীদেরও প্রবেশাধিকার দেওয়া হয় না। তাই এসব শিবিরের মানুষের অবস্থা কখনোই সাধারণ মানুষের সামনে আসেনি।
ইত্তেফাক/ জেআর
Comments