ত্রিপুরায় যে পাঁচ কারণে জিতলো বিজেপি জোট
উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্য ত্রিপুরায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়ী হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি ও আদিবাসীদের সংগঠন আইপিএফটির জোট। রাজ্যে ২৫ বছর ধরে একটানা ক্ষমতায় থাকা বামফ্রন্ট পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে। তারা বলছে, এই ফল অপ্রত্যাশিত। কিন্তু যে বিজেপি এত বিপুল ভোট পেয়ে জয়ী হলো সেই দলই ৫ বছর আগে ওই রাজ্যে প্রায় অস্তিত্বহীন ছিল। তাহলে কীভাবে এল এই জয়? বিশ্লেষকরা ৫টি কারণের কথা বলছেন। সেগুলো হচ্ছে-
১. প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া : দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় বামপন্থীরা। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার নিজেই ২০ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী। তাই ক্ষমতাসীন সরকারবিরোধী হাওয়া এবার ছিলই, তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে বিজেপি নিজেদের মূল সোগানও দিয়েছিল ‘চলো পাল্টাই’-অর্থাত্ পরিবর্তন চাই।
২. বেকারত্ব ও দুর্নীতির অভিযোগ : বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিজেপি তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশের ভোট পেয়েছে এবার। শিক্ষাদীক্ষা রয়েছে, কিন্তু তাদের হাতে কোনো কাজ নেই। অধ্যাপক গৌতম চাকমা জানান, শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা এ রাজ্যে প্রায় ৫ লাখ। তাদের ক্ষোভ তো থাকবেই। প্রধানমন্ত্রী মোদী ত্রিপুরায় প্রচারে গিয়ে বারবার এই বিষয়টার ওপরে জোর দিয়েছিলেন। সরকারের দুর্নীতির বিষয়টিও প্রাধান্য পেয়েছে প্রচারণায়।
৩. আদিবাসী ভোট : ত্রিপুরার এক-তৃতীয়াংশ আসন আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত। আদিবাসী ভোট নিজেদের দিকে টানতে আঞ্চলিক দল আইপিএফটির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিল বিজেপি। নয়টি আসনে আইপিএফটি লড়েছিল যার মধ্যে আটটিতে তারা জিতেছে।
৪. তৃণমূল স্তরে সংগঠন বিজেপি’র : বিজেপি গত প্রায় দু’বছর ধরে জোর দিয়েছিল তৃণমূল স্তরে সংগঠন গড়ে তুলতে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের নেতা সুনীল দেওধর ওখানেই ঘাঁটি গেড়েছিলেন, সঙ্গে ছিলেন আরেক আরএসএস নেতা ও বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ছাড়াও ত্রিপুরায় বিজেপির সংগঠন গড়ে তুলেছেন উত্তরপূর্বাঞ্চলে বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
৫. কংগ্রেস থেকে তৃণমূল কংগ্রেস হয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতারা : বহুদিন ধরে কংগ্রেসই ছিল ত্রিপুরায় বামফ্রন্টের প্রধান বিরোধী শক্তি। কিন্তু বেশ কয়েক বছর আগে কংগ্রেসের একটা বড় অংশ যোগ দেয় তৃণমূল কংগ্রেসে। আর বছর কয়েক আগে সেই গোটা অংশটাই চলে আসে বিজেপিতে। বিবিসি
ইত্তেফাক/আনিসুর
Comments