রাণী মাতা -ইয়ান ইয়ান ধূপশিলের মতই মধ্যপাড়ার তঞ্চংগ্যা মহিলারা তাঁদের হাতে বোনা তঞ্চংগ্যা কাপড় পরিয়ে



ধূপশিলের মতই মধ্যপাড়ার তঞ্চংগ্যা মহিলারা তাঁদের হাতে বোনা তঞ্চংগ্যা কাপড় পরিয়ে যাত্রাপথের পরের গ্রাম ডাউন-এর উদ্দেশ্যে বিদায় দিলেন। এই গ্রামে অন্য গ্রামগুলোর মতই যে প্রকল্পের সূত্রে রাজাবাবুর সাথে পরিদর্শন সফরে যাওয়া, সেই প্রকল্পের অধীনে সহযোগিতাপ্রাপ্ত গ্রামবাসীদের সাথে সাক্ষাৎ হল। প্রকল্পের দাদাদের অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও মহিলারা সামনে বসেননি। মিটিং-এর এক পর্যায়ে রাজাবাবু বিশেষ করে সুযোগ দিলেন তাঁদের আর তরুণ তরুণী যুবাদের কথা বলার। লজ্জা শঙ্কা অনভ্যাস কাটিয়ে কেউ কথা বলেননি। অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। এর আগেও যতবার যত জায়গায় গিয়েছি, সে প্রত্যন্ত গ্রামে হোক আর উপজেলা সদরে হোক, একবার দুইবার বাদে উল্লেখযোগ্য কোন ব্যতিক্রম দেখিনি। এরকম পরিস্থিতিতে আমরা একটা কাজ করি। আনুষ্ঠানিক মিটিং আলাপ শেষে আমি তাঁদের ঝাঁকে টুপ করে ঢুকে পড়ি। কথা বলি। নিজের ভাঙ্গা চাকমা শুনে নিজেই হাসতে হাসতে কাত, তাঁদের কথা নাই বলি। হাসি সব বাঁধ ভেঙ্গে দেয়। সব। তাঁদেরও বাঁধ ভেঙ্গে যায়। তাঁরাও কথা বলেন। যে কথাগুলি শোনা দরকার, যে কথাগুলি এতক্ষণ কথা বলা গ্রামের পুরুষ সদস্যদের কথাগুলোর মতই সমান গুরুত্বপূর্ণ।
যারা “মহিলারা সুযোগ দিলেও কথা বলে না, বলতে চায় না” বলে দায়িত্ব শেষ করে দিতে চান, তারা সমাজে এতদিনের লালন করা নারীর বুদ্ধিমত্তার প্রতি অবহেলামূলক দৃষ্টিভঙ্গির বাস্তবতা স্বীকার করেন না। কিংবা সেই দৃষ্টিভঙ্গি কিভাবে সমাজে বা সামাজিক যে কোন অনুষ্ঠানে নারীর অবস্থান সম্পর্কে নারীকে প্রতিনিয়ত হীনমন্যতায় ভোগায়, সে সম্পর্কে তারা সচেতন না।
কোন কিছু না, তেমন কোন কিছুর প্রয়োজন নেই। কেবল প্রয়োজন শোনার আগ্রহ আর আন্তরিকতার।
আর তাঁরা কি দিবেন বিনিময়ে? কি দেয়ার আছে তাঁদের? আপনাকে তাঁরা তাঁদের অফুরান ভালবাসায় সিক্ত করবেন।
Comments