যেন পানিতেই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত'
হাওরে সূর্যোদয়ের সময় মনে হয় যেন আকাশের বুক থেকে আগুনের রশ্মি বের হয়ে জলধারায় মিলেমিশে একাকার হয়ে আস্তে আস্তে উপরে উঠছে। হাওরের প্রবহমান জলে সেই ছায়া পড়ে ফুটে ওঠে অনিন্দ্য সুন্দর দৃশ্যপট। আর হাওরে সূর্যাস্তের সময় যেন আকাশের মেঘগুলোও লাল হয়ে যায়। তখন আকাশের দিকে তাকালে মনে হবে, মেঘের গায়ে অগ্নিশিখা। যেন পানির ভেতর থেকে সূর্য উঠছে আবার অস্ত যাচ্ছে। হাওরের থৈ থৈ পানিতে সেই সূর্যের আলো পড়ে আগুনের লাভার মতো দেখায়। এ দৃশ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পিপাসুদের মনে দোলা দিয়ে যাবে। কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার বেড়িবাঁধের যে কোনো স্থান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের এ অসাধারণ রূপ অবলোকন করা যায়।
বুধবার ভোরে বেড়িবাঁধে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ জলরাশি, চারদিকে পানি আর পানি। বিশাল জলরাশির মাঝে দ্বীপের মতো 'ভাসমান' ছোট ছোট গ্রাম। এমন যে কোনো গ্রাম থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় হাওরের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
নিকলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে সদ্য পাশ করা ছাত্র চন্দন বর্ম্মন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর পাশ করা ছাত্র সারোয়ার আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সদ্য পাশ করা ছাত্র সাজন মাহমুদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে সদ্য পাশ করা ছাত্র জুমান আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের ছাত্র আল মামুন ও কিশোরগঞ্জ সরকারি গুরুদয়াল কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক নুসরাত জাহান উর্মি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের নিকলীর বেড়িবাঁধে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখে যে মনোমুগ্ধকর অনুভূতি সৃষ্টি হয়। সমুদ্র সৈকতে সূর্যোদয় ও সূর্য অস্ত দেখেও এতো অনুভূতি সৃষ্টি হবে না।
হাওর পাড়ের কয়েকজন গ্রাম বাসির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সৌন্দর্য পিপাসীরা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করে চলে যায় কুয়াকাটা বা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। কিন্তু কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওরে কেউ সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে আসে না। সংবাদপত্রগুলোতে সঠিকভাবে প্রচার-প্রচারণার অভাবে সেভাবে কেউ হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে না বলে মনে করেন তারা।
নিকলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কারার সাইদুল ইসলাম বলেন, হাওর উপজেলা নিকলীর বেড়িবাঁধের ওপর থেকে সূর্যোদয় দেখলে মনে হয়, পানির ভেতর থেকে সূর্য উঠছে। আর বিকেলে সূর্যাস্ত দেখলে মনে হবে যেন পানির ভেতরে সূর্য ডুবে যাচ্ছে। এ দৃশ্য বিনোদন পিপাসুদের হৃদয়ে নাড়া দেবে। তিনি আরো বলেন, 'সরকারি উদ্যোগে পর্যটকদের জন্য জায়গা করে দিতে পারলে অবশ্যই হাওর হবে পর্যটন কেন্দ্র।'
ইত্তেফাক/জামান
Comments