অভিবাসী জীবনের দুঃসহ স্মৃতি তুলে ধরলেন কয়েকজন নারী শ্রমিক

অভিবাসী জীবনের দুঃসহ স্মৃতি তুলে ধরলেন কয়েকজন নারী শ্রমিক
                                                                          ফাইল ছবি


নিজের ভাগ্য ও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে যে সকল নারী শ্রমিক বিদেশের মাটিতে পা রাখছেন তাদের ৯৯ শতাংশ নির্যাতনের শিকার বলে এক গণশুনানিতে প্রকাশ পেয়েছে। গতকাল শনিবার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে অনুষ্ঠিত ‘কেমন আছেন অভিবাসী নারী শ্রমিকেরা?’ শীর্ষক এই গণশুনানির আয়োজন করে ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং ও নিজেরা করি।
অনুষ্ঠানে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন বিচারপতি(অব) নাজমুন আরা , বিচারপতি(অব) নিজামুল হক,শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের আহবায়ক ড. হামিদা হোসেন। প্যানেল আলোচক ছিলেন নারী অধিকারকর্মী এডভোকেট সালমা আলী,অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর, সাংবাদিক শরিফুল হাসান, ওআরবির  নির্বাহী সাইফুল ইসলাম, শ্রমিকনেতা আবুল হোসেন। আরও বক্তব্য রাখেন ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং-বাংলাদেশের সমন্বয়ক খুশী কবীর, মানবাধিকার কর্মী এডভোকেট সুলতানা কামাল। অভিবাসী জীবনের দুঃসহ বর্ণনা তুলে ধরেন মধ্যপ্রাচ্যের নারী শ্রমিক হিসেবে গিয়েছিলেন এমন কয়েকজন নারী।
জর্ডানে থেকেছেন এক নারী। যে বাড়িতে তিনি থেকেছেন সেই বাড়ির গৃহকর্তা ও ছেলে দফায় দফায় তাকে শারীরিক নির্যাতন করেছে। পরে অনেক কষ্ট করে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। আজও তিনি অসুস্থ বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তার এখনও রক্তক্ষরণ হয়।
অপরদিকে প্রতিদিন ৩০০ কাপড় ধোয়া আর আয়রন করার দায়িত্ব ছিল আরো এক শ্রমিকের। এর সাথে ছিল যৌন নির্যাতন। বিছানায় পড়া ভাই আর এক ছেলেকে বাঁচাতে বিদেশ গিয়ে আজ নিজেই মরতে বসেছেন তিনি। জমিজামা বিক্রি করে অনেক কষ্ট সহ্য করে ধার-দেনা করে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। এখন কোথায় হতে আসবে ধারের টাকা। তিনি বলেন, সরকার যদি তাদের জন্য কিছু করতো। প্রত্যেক অভিবাসী শ্রমিক তাদের কষ্টের বর্ণতা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ভারী হয়ে ওঠে মিলনায়তন।
বিচারপতি(অব) নাজমুন আরা বলেন, যেখানেই গৃহশ্রমিকরা যাবে তাদের অধিকার রক্ষা করতে সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। গৃহকর্তাদেরও জবাবদিহিতার মধ্যে আনার সুপারিশ করেন তিনি। কোন একটা ঘটনা নিয়ে তিনি মামলা করে আইনের আওতায় আসার পরামর্শ দেন। তিনি প্রান্তিক নারীদের সচেতন করার জন্য বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতি আহবান জানান।
এডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, সরকারকে অভিবাসী নারী শ্রমিকের অধিকার রক্ষা করতে হবে। দেশের বাইরে কোন শ্রমিকের বিপদে দূতাবাসের দায়িত্বের কথাও তিনি মনে করিয়ে দেন। ন্যায্য পারিশ্রমিক না দেয়া , এক জায়গাতে বলে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কারণে তিনি দালালদের আইনের আওতায় আনার পরামর্শ দেন।
খুশী কবীর সমস্যা সমাধানে সরকার ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহবান জানান।
ইত্তেফাক/এমআর

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা