এ মাছ দেখলেই শান্তি!
- Get link
- X
- Other Apps
এ মাছ দেখলেই শান্তি। কিছু মাছ তো একেবারে জ্যান্ত—তিড়িংবিড়িং লাফাচ্ছে। কিছু মাছ নট নড়চড়ন, তবে টাটকা পুরো মাত্রায়। হবেই তো। নদী আর খাল–বিল থেকে ধরে সোজা নিয়ে আসা হয়েছে বাজারে। আর সেই বাজারটি হচ্ছে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা বাজার।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক চার লেন করার কাজ চলছে। এ সড়ক ধরেই টাঙ্গাইল শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে এলেঙ্গা। এ সময়টায় এই সড়ক দিয়ে এলেঙ্গায় যাওয়া-আসা মানেই ধুলোয় ধূসর হওয়া। তাই মহাসড়ক সড়ক না ধরে ঘুরপথে এলেঙ্গা। লক্ষ্য একটাই—মাছের বাজার দেখা। এ সময়টায় নদী-খাল-বিলের প্রচুর মাঠ উঠছে এ বাজারে। তাই সরু পথ ধরে বইল্যা, গালা, মগড়া এলাকা পার হয়ে এলেঙ্গা বাজার।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে যখন বাজারে পা দিলাম, গোটা জায়গা ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম। ঝাঁকাভর্তি মাছ নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। ক্রেতাদের সঙ্গে চলছে দরদাম।
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার একটি ইউনিয়ন এলেঙ্গা। বঙ্গবন্ধু সেতুর কয়েক মাইল আগে রাস্তার পাশেই বাজারটি। কিন্তু এই প্রত্যন্ত এলাকায় এত মাছের সম্ভার! দুই সারি ধরে অন্তত ৬০ থেকে ৭০ জন ক্রেতা। তাঁদের একজন হারান রাজবংশী। একটি ঝাঁকার ওপর এনামেলের পাত্রভর্তি কাজুলি মাছ। রুপালি থালায় রুপালি কাজুলি। বিকেলের নরম রোদে বেড়েছে রূপের বাহার। বাজারটির কাছাকাছি পুংলী নদী। সেই নদী থেকে মাছ ধরে এনেছেন হারান। বললেন, ‘এবার বর্ষা হইছে। তাই নদী-বিলের মাছ বেশি।’ এক কেজি কাজুলির দাম হাঁকলেন ৬০০ টাকা। বাজারের অন্যত্র সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০–তে মিলছে কাজুলি—এমন কথায় হারানের উত্তর, ‘মাছের ভালো-মন্দ আছে না।’
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে যখন বাজারে পা দিলাম, গোটা জায়গা ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম। ঝাঁকাভর্তি মাছ নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। ক্রেতাদের সঙ্গে চলছে দরদাম।
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার একটি ইউনিয়ন এলেঙ্গা। বঙ্গবন্ধু সেতুর কয়েক মাইল আগে রাস্তার পাশেই বাজারটি। কিন্তু এই প্রত্যন্ত এলাকায় এত মাছের সম্ভার! দুই সারি ধরে অন্তত ৬০ থেকে ৭০ জন ক্রেতা। তাঁদের একজন হারান রাজবংশী। একটি ঝাঁকার ওপর এনামেলের পাত্রভর্তি কাজুলি মাছ। রুপালি থালায় রুপালি কাজুলি। বিকেলের নরম রোদে বেড়েছে রূপের বাহার। বাজারটির কাছাকাছি পুংলী নদী। সেই নদী থেকে মাছ ধরে এনেছেন হারান। বললেন, ‘এবার বর্ষা হইছে। তাই নদী-বিলের মাছ বেশি।’ এক কেজি কাজুলির দাম হাঁকলেন ৬০০ টাকা। বাজারের অন্যত্র সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০–তে মিলছে কাজুলি—এমন কথায় হারানের উত্তর, ‘মাছের ভালো-মন্দ আছে না।’
কাছের পুংলী নদীর পাশাপাশি যমুনার মাছও মেলে এ বাজারে। সাধারণত বড় মাছ। নদীর পাড় থেকে কয়েকটি বোয়াল কিনেছেন রতন চন্দ্র রাজবংশী। বড় বোয়ালটি অন্তত চার কেজি ওজন। ছেলে সহদেব চন্দ্র রাজবংশীকে সঙ্গে করে বোয়ালের পাশাপাশি ছোটও মাছও এনেছেন। আছে কাজুলি ও টাটকিনি। গায়ে কয়েক রঙের সারিকাটা ‘বৌ’ বা বেতরঙি মাছও আছে। কালেভদ্রে এ মাছ চোখে পড়ে। তেলে ভরা মাছটি খেতে সুস্বাদু—যতটা দেখতে বড় মনোহর।
কালিহাতীতে বিল আছে কয়েকটি। এ উপজেলার চারান বিলের নামডাক আছে। উপজেলার সরকারি ওয়েবসাইটেও এর উল্লেখ আছে। চারান বিল ছাড়াও পুইসন্যা, কড়তা বিলসহ নানা বিল আছে। শীত পড়তে শুরু করেছে। নদী-নালা-বিল যাচ্ছে শুকিয়ে। এ সময়টায় কালিহাতীর বিলজুড়ে শুরু হয়েছে মাছ ধরার পরব। চরপাড়া গ্রামের অখিল চন্দ্র বর্মণ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কড়তা বিলে মাছ ধরেছেন। বিকেলে শোল, কই, মাগুর নিয়ে বাজারে এসেছেন। কইগুলো ছিল দেখার মতো। বিঘত খানেক লম্বা, গায়ে কড়া সবুজ দাগ পড়া কইগুলো একেবারে লাফাচ্ছে। অখিল বললেন, ‘৩০ বছর ধইর্যা মাছ ধরতেছি। আগের মতো মাছ তো নাই। তয় এবারের কথা ভেন্ন। অনেক মাছ হইছে এবার।’
পানিভর্তি ড্রামভরা টাকি মাছ নিয়ে বসে আছেন মকবুল আহমদ। এ মাছ তিনি এনেছেন আড়ত থেকে। বিল বা নদীর মাছ এখানে আসে। তারপর বিক্রির জন্য খুচরা বিক্রেতারা মাছ কেনেন। মকবুল তেমন এক মাছ ব্যবসায়ী। টাকির দাম চাইছেন ২৪০ টাকা।
মাছের এ বাজারে এলাকার মানুষের পাশাপাশি টাঙ্গাইল শহর, কালিহাতী সদর, ভুয়াপুর, বাসাইল থেকেও অনেকে আসেন। মহাসড়ক ধরে যাওয়ার পথে অনেকে চটজলদি মাছের বাজারে ঢুঁ মারেন। আর বাইরের এসব ক্রেতা আসার পর এ বাজারে মাছের দাম বেড়েছে, এমনটা অনুযোগ শোনা গেল স্থানীয় স্কুলশিক্ষিকা আঞ্জুমান আরার কাছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বললেন, ‘জাত জেলে যারা, মাছের ব্যবসা তাদের কাছে থেকে অন্যদের হাতে চলে গেছে। তবে এলেঙ্গা বাজারে এর ভিন্ন চিত্র।’ তাঁর এ কথার প্রমাণ পেলাম অনেক। বংশপরম্পরায় জেলে পরিবারের অনেকেই আছেন এ বাজারে।
কালিহাতীর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল হালিম বলেন, ‘এবারের বন্যায় খাল বা বিলের পানি উপচে পড়েছে। অনেক জায়গায় নদীতে গিয়েও পড়েছে মাছ। তাই এবার মাছটা একটু বেশি।’
বিকেলের আলো মিলিয়ে যাওয়ার সময় হলে আমরাও টাঙ্গাইল শহরের পথ ধরলাম। সেই ঘোরা পথ ধরে। বাজার পেরিয়ে খানিকটা যাওয়ার পর পুংলী নদীর সেতু পার হতে হয়। প্রায়-সন্ধ্যায় সেতুর নিচে তখনো জেলেদের তৎপরতা চোখে পড়ল।
- Get link
- X
- Other Apps
Comments