মাসহ নিখোঁজ ৩ মেয়ের সন্ধান মেলেনি ১৩ দিনেও

নরসিংদীতে মা ও তিন মেয়ে নিখোঁজের ১৩ দিন পার হয়ে গেলেও তাদের খুঁজে বের করতে পারেনি পুলিশ। দীর্ঘদিনেও নিখোঁজদের সন্ধান না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন স্বজনরা।
এদিকে নিখোঁজ মা ও মেয়েদের গুম বা অপহরণ করা হয়েছে কীনা- তা স্পষ্ট করে বলতে পারছে না পুলিশ।
তবে তাদের জীবিত উদ্ধার করতে পুলিশের কাছে বার বার আকুতি জানাচ্ছেন তাদের পরিবারের লোকজন।
নিখোঁজ মা ও তিন মেয়ে হলেন- নরসিংদীর পূর্ব ভাগদী এলাকার আবদুল মতিন খানের মেয়ে মমতা বেগম (৪০) ও মমতার তিন মেয়ে সাদিয়া আফরোজ (১৮), সুমাইয়া আক্তার (১৬) ও লিমা আক্তার (১০)।
নিখোঁদের স্বজনরা জানান, সদর উপজেলার নুরালাপুর ইউনিয়নের বলভদ্রদী গ্রামের আবু সালেহর সঙ্গে মমতা বেগমের বিয়ে হয়। দীর্ঘদিন ধরেই তাদের সংসারে মনোমালিন্য চলছিল।
স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে কয়েকবার সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়ি চলে আসেন মমতা।
গত ৩১ অক্টোবর স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে তিন মেয়েসহ বাপের বাড়ি চলে আসেন তিনি। গত ২ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কাউকে কিছু না বলে সন্তানসহ বাসা থেকে চলে যান মমতা। সকালে মমতাকে না পেয়ে সব আত্মীয়স্বজনের বাসায় খোঁজাখুঁজি করা হয়।
ওই দিন বিকালে গফুর হাজির মার্কেটের আবুল কাশেম নামে এক লোকের মাধ্যমে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করতে যান মমতা। খবর পেয়ে মমতার ভাই আবদুল কাদির খান মমতাকে বাসায় নিয়ে আসতে চাইলেও তিনি বাসায় আসতে রাজি হননি। পরে কাদিরকে বাসা থেকে আরও দুই ভাইকে নিয়ে আসতে পরামর্শ দেন আবুল কাশেম।
কাদির দুই ভাইকে সঙ্গে নিয়ে গফুর হাজি মার্কেটে এসে দেখেন মমতা ও তার সন্তানরা কেউ নেই। কাশেম তাদের জানায়, মমতা তার স্বামীর বাড়ি চলে গেছে। পরে স্বামীর বাড়ি খবর নিয়ে জানা গেছে সেখানেও যাননি মমতা।
অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মমতা না পেয়ে গত ২ নভেম্বর নরসিংদী মডেল থানায় জিডি করে মমতার ভাই আব্দুল কাদির খান।
নরসিংদী ডিবি পুলিশের এসআই আব্দুল গাফফার বলেন, নিখোঁজ চারজনকেই আমরা জীবিত উদ্ধারের চেষ্টা করছি। মমতার স্বামী ও তার ভাইদের জিঙ্গাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে নিখোঁজদের বিষয়ে তেমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
মমতার ভাই আবদুল কাদির খান বলেন, আমরা পুলিশের কাছে বারবার যাচ্ছি তাদের খোঁজ বের করার জন্য। আমরা সবাই টেনশন করছি। আমরা তাদের জীবিত ফেরত চাই।
নিখোঁজদের উদ্ধার ব্যাপারে জানতে চাইলে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুর রহমান বলেন, ঘটনাটি বড় আকার ধারণ করেছে। তাই পরিবারকে মামলা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পুলিশ নিখোঁজদের পরিণতি নিয়ে সন্দিহান।
নিখোঁজদের পতিতালয়ে বিক্রি, বিদেশে পাচার কিংবা মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করা হয়েছে কী না- সে বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে বলে তিনি জানান।

Comments