সরকারকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিলেন সুপ্রিম কোর্ট
নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা চূড়ান্ত করতে আরো সময় পেল রাষ্ট্রপক্ষ। আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আদালত। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগ গতকাল রবিবার এ দিন নির্ধারণ করেন।
গতকাল এ নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের ওপর শুনানিকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিধিমালা করা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসার আগ্রহ জানিয়ে বলেছেন, ‘আমার মনে হয় এটা (বিধিমালা) হওয়া দরকার। এটা নিয়ে বসা দরকার। কোথায় কোথায় আপত্তি আছে সেটা খোঁজা দরকার। সময় চাচ্ছেন, সময় দিচ্ছি। তবুও এটা হওয়া দরকার। ’
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট চূড়ান্ত করার বিষয়ে শুনানির জন্য গতকাল দিন ধার্য ছিল। গত ২০ আগস্ট এক আদেশে দেশের সর্বোচ্চ আদালত গতকালের দিনটি ধার্য করেছিলেন। কিন্তু গতকাল রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম চার সপ্তাহ সময়ের আবেদন করেন।
এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত উল্লিখিত মন্তব্য করেন এবং ৫ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে আদেশ দেন।
গত ৩০ জুলাই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাও বৈঠকে বসার জন্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপির প্রতি আহ্বান জানান। এর জবাবে সেদিনই আইনমন্ত্রী টেলিফোনে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলেন এবং ৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার বৈঠকের দিন নির্ধারণ করেন। পরে গত ৩১ জুলাই আইনমন্ত্রী সরকারদলীয় আইনজীবীদের এক সমাবেশেও জানান, ৩ আগস্ট প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বসবেন। কিন্তু আইনমন্ত্রী অসুস্থ থাকায় নির্ধারিত দিনে বৈঠক হয়নি। এ অবস্থায় প্রধান বিচারপতি গত ৬ আগস্ট আবারও বৈঠকে বসার আহ্বান জানান। কিন্তু সেই বৈঠক এখনো বসেনি।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। কিন্তু গত বছর ২৮ আগস্ট শুনানিকালে আপিল বিভাগ খসড়ার বিষয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বিধিমালাসংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ। যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী। এরপর ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব আদালতে হাজির হয়ে রাষ্ট্রপতির একটি প্রজ্ঞাপন দাখিল করেন। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গেজেট জারির প্রয়োজন নেই। এর পরও আপিল বিভাগ ১৫ জানুয়ারির মধ্যে গেজেট জারির নির্দেশ দেন। কিন্তু গেজেট জারি না করে একের পর এক সময়ের আবেদন করছে রাষ্ট্রপক্ষ। এই প্রেক্ষাপটে গত ১৬, ২০ ও ২৭ জুলাই প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী। ২৭ জুলাই খসড়া হস্তান্তর করেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এ খসড়া গ্রহণ করেননি। এরপর থেকে রাষ্ট্রপক্ষ আবারও সময়ের আবেদন করছেই।
Comments