ওরা ছুটি পায় না


দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ঈদ। যারা কাজের প্রয়োজনে পরিবার ছেড়ে দূরে থাকেন তাদের ঈদের আনন্দে পূর্ণতা আসে তখনই যখন ঈদ উপলক্ষে শেকড়ের টানে পরিবারের কাছে ছুটে যেতে পারেন। অধিকাংশ পেশার লোকজনই পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ পেলেও বাসা-বাড়িতে কাজ করা অধিকাংশ গৃহকর্মীই এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত হন। ঈদে শেকড়ের টানে বাড়ি ফেরার যে আনন্দ তা মানে না কোনো বৈষম্য। আর সবার মতো গৃহকর্মীরাও দিন গুনতে থাকে কবে আসবে ঈদ। কবে প্রিয়জনের বুকে ফিরে যাবে। ঈদে গৃহকর্মীদের মনের এই আকুতির কাছে হার মানে নতুন জামাকাপড়, ভালো-মন্দ খাবার সবকিছু। কিন্তু আমরা অনেক ক্ষেত্রেই তা বুঝতে চাই না। বুঝতে চাই না ওরাও মানুষ, ওদের ঈদ আনন্দও ওদের পরিবারে। কারণ আর কিছুই নয়, গৃহকর্মী ছাড়া একদিন চলাও আমাদের জন্য কষ্টকর। যে কারণে ঈদে গৃহকর্মীদের বাড়ি যেতে দিতে আমরা রাজি হই না। ঈদে বাড়ি না যাওয়ার কারণে তারা নতুন জামাকাপড় পায়, অনেকের বাবা-মা বাড়তি টাকা-পয়সা, কোরবানির মাংসও পায়। শুধু পায় না প্রিয় মুখগুলোকে। যে অতৃপ্তি মলিন করে দেয় তাদের সব আনন্দকে। মুন্সীগঞ্জের ১৩ বছরের শেফালি দেড় বছর ধরে গৃহকর্মীর কাজ করছে ঢাকার বনশ্রীতে। গত বছর রোজার ঈদের দুই মাস আগে কাজে আসায় গৃহকর্ত্রী সেই বছর দুই ঈদেই তাকে বাড়ি যেতে দেয়নি। বলেছিল, আগামী বছর কোরবানির ঈদে যেতে। সেই থেকে আশায় বুক বাঁধা। অবশেষে দোরগোড়ায় ঈদ। তবে এবারও শেফালির বাড়ি যাওয়া হবে না। শেফালি জানায় ‘ঈদের খালার (গৃহকর্ত্রী) পোলা বিদেশ থিকা আইব, অনেক কাম থাকব। তাই খালায় কইছে বাড়ি যাওন যাইব না। তার বদলে বেতনের সঙ্গে দুই হাজার টাকা বাড়তি দিছে। আমি না গ্যালে মায় বাড়তি টাকা পাইব হ্যার লাইগা আমিও বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা মাডি দিছি। তয় মা বোইনগুলার লাইগ্যা মনডা পুড়তাছে।’

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা