পুতিনের বিরোধিতা করছেন ‘বিশ্বস্ত’ চেচেন নেতা কাদিরভ /কালের কণ্ঠ ডেস্ক
এত দিন ধরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘সৈনিক’ হিসেবে নিজেকে অ্যাখ্যা দিয়ে এলেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে স্পষ্টভাবে তাঁর বিরোধিতা করছেন চেচনীয় নেতা রমজান কাদিরভ। রুশ সরকার বর্তমানে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
রমজান নিজেকে তো বটেই, অন্য চেচনীয়দেরও এত দিন ‘পুতিন বাহিনীর সেনা’ অভিহিত করে এসেছেন। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাঁর বক্তব্য, ‘যারা অপরাধ করছে, রাশিয়া যদি সেসব শয়তানকে সমর্থন দেয়, তবে আমি রাশিয়ার অবস্থানের বিরুদ্ধে। ’ চেচনিয়ার রাজধানী গ্রজনিতে এক জনসভায় এমন বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি তিনি নিজের বক্তব্য ইনস্টাগ্রামেও পোস্ট করেছেন। ‘গোপন নৃশংসতা সত্ত্বেও বহু দেশ ও মানবাধিকার সংগঠনের’ মৌনতারও কড়া সমালোচনা করেন তিনি। তাঁর বক্তব্যে তিনি রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে জাতিসংঘের ভূমিকার সমালোচনা করেন।
রাজনৈতিক বিরোধিতাকারীদের সাধারণত রাশিয়া সহ্য না করলেও কাদিরভের বক্তব্যে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ক্রেমলিন। রোহিঙ্গা সংকটের ব্যাপারে কাদিরভের অবস্থান নিয়ে রুশ গণমাধ্যমগুলোও তেমন কোনো খবর উপস্থাপন করেনি। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা রিয়া নভোস্তি কাদিরভের কঠোর সমালোচনা করে একটি উপসম্পাদকীয় পোস্ট করলেও দ্রুত সেটা সরিয়ে ফেলে। এ ছাড়া রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন সম্প্রতি চীনে অনুষ্ঠিত পঞ্চদেশীয় ব্রিকস সম্মেলনে বলেছেন, ‘প্রত্যেক ব্যক্তির নিজস্ব মতামত থাকে, সে যে-ই হোক না কেন, এমনকি তারা যদি ধর্মীয় নেতাও হয়ে থাকে।
’
কাদিরভের স্পষ্ট বিরোধিতা সত্ত্বেও রুশ প্রশাসনের এমন মৌনতার পেছনের কারণ সম্পর্কে বিশ্লেষকদের অভিমত, বিশ্বের ইসলামী রাষ্ট্রগুলোতে রাশিয়ার অনানুষ্ঠানিক দূতের ভূমিকা পালন করেন কাদিরভ। এ ছাড়া রাশিয়ার মুসলিম সমাজের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের মুসলিমদের মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। বিশ্ব মুসলিম অঙ্গনে শক্তিশালী হয়ে ওঠা কাদিরভ এখন রাশিয়ার হাতের মুঠোয় থাকা নেতাদের ভেতর থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র অবস্থান নিতে চাচ্ছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সূত্র : ইউরেশিয়াডটনেট।
Comments