রাশিয়া, চীন ও ভারতকে ভয় করবেন না, এদেশের জনগণ আপনার সঙ্গে আছে: প্রধানমন্ত্রীকে হেফাজত
‘আপনি রাশিয়া, চীন ও ভারতকে ভয় করবেন না। রোহিঙ্গা ইস্যুতে এদেশের জনগণ আপনার সঙ্গে আছে।’ সোমবার দুপুরে বাংলাদেশে মিয়ানমারের দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে এসব কথা বলেন কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক ইসলামি সংগঠন হেফাজতে ইসলামের নেতারা।
গুলশানে মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্যে দুপুর ১২টায় বায়তুল মোকাররমের সামনে থেকে মিছিল বের করে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। শান্তিনগর মোড়ে পৌঁছালে মিছিলটি পুলিশ আটকে দেয়। ওখানেই অবস্থান নেন তারা।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে হেফাজতের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগর সভাপতি আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমী বলেন, ‘মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে নিরীহ রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর যে নির্মম গণহত্যা চলছে, তা ইতিহাসের সব বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। বিশ্বব্যাপী ধিক্কারের পরেও মিয়ানমারের সামরিক জান্তা তাদের নিষ্ঠুরতা বন্ধ করেনি। তাই রোহিঙ্গাদের রক্ষায় সরকারকে কূটনৈতিকভাবে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। কূটনৈতিক পথে সফলতা না এলে আরাকানকে স্বাধীন করার জন্য সামরিক ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে দেশের মানুষ সরকারের পাশে থাকবে।’
মাওলানা মুজিবুর রহমান পেশোয়ারী প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি রাশিয়া, চীন ও ভারতকে ভয় করবেন না। রোহিঙ্গা ইস্যুতে এদেশের জনগণ আপনার সঙ্গে আছে।’
মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ বলেন, ‘রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্মম গণহত্যা বন্ধ না হলে আরাকান স্বাধীন করতে জিহাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।’
মাওলানা আজীজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘মিয়ানমারের সামরিক জান্তারা এ যাবত একাধিকবার বাংলাদেশের আকাশ সীমা লংঘন করেছে। সরকার এ বিষয়ে তেমন কোনও পদক্ষেপ না নিয়ে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি প্রদর্শন করেছে।
মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, ‘সরকারকে এই গণহত্যার প্রতিবাদে বন্ধ করে দিতে হবে মিয়ানমার দূতাবাস। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা মুসলমানদের সাহায্যে বাংলাদেশি মুসলমানদের আনসারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে এবং সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়, খাদ্য, ওষুধ, পানিসহ যাবতীয় বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে।’
মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী বলেন, ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ করতে না পারলে সরকার আমাদের অনুমতি দিক। আমরা এদেশের গণমানুষ দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে আরাকান স্বাধীন করতে জিহাদে যেতে প্রস্তুত আছি।’
মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, ‘সন্ত্রাসী বাবার সন্ত্রাসী মেয়েই হচ্ছেন অং সান সু চি, তার বাবাও রোহিঙ্গা মুসলমানদের রক্ত নিয়ে হোলি খেলা খেলে গেছেন। অং সান সু চির এই হোলি খেলা বন্ধ না হলে আরাকান স্বাধীন করতে এদেশের মুসলমানেরা মিয়ানমার যেতে প্রস্তুত রয়েছে।’
এদিকে পুলিশি বাঁধার মধ্যে সংগঠনের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মিয়ানমার দূতাবাসে একটি স্মারকলিপি দিয়ে আসেন। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী, মাওলানা মুজিবুর রহমান পেশোয়ারী, মাওলানা হাকীম আব্দুল করীম, মাওলানা আজীজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা নাজমুল হাসান, মাওলানা মুনীর হোসাইন কাসেমী ও মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী।
স্মারকলিপিতে রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা বন্ধ, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়া, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে ফেরত নেয়ার দাবি জানানো হয়।
Source Sagar Biswas
Comments