বাঙ্গালী ছেলেকে বিয়ে করে অভিশপ্ত জীবনের দু:সহ চারটি বছরের বর্ননা দিচ্ছেন

Image may contain: 1 person, outdoor



বাঙ্গালী ছেলেকে বিয়ে করে অভিশপ্ত জীবনের দু:সহ চারটি বছরের বর্ননা দিচ্ছেন "পেইমা মারমা"।
___________________
(অনেক আগের সাক্ষাৎকারে দেয়া ভিডিও থেকে হুবহু তুলে ধরলাম)।
আমি পেইমা মারমা।পিতা:কংজাই মারমা,মাতা:আপ্রুইমা মারমা।বাড়ী:কাপ্তাই পাড়া,সিঙ্গিনালা,২নং মুবাছড়ি ইউপি,মহালছড়ি থানা,জেলা খাগড়াছড়ি।আমরা তিন ভাই বোন।আমি তিন নম্বরটা। আমি ২০০৫ সালে সিঙ্গিনালা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাশ করে মহালছড়ি কলেজে ভর্তি হই। এ সময় একজন বাঙ্গালী ছেলের সাথে আমার পরিচয় হয়,পরে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। বাঙ্গালী ছেলেটি সেসময় খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজে পড়তো। নাম মো:মুজিবুর রহমান,পিতা:ইদ্রিস সওদাগর। মহালছড়ি বাজারে তার বাড়ী।সম্পর্কের পর হতে মুজিবুর প্রত্যেকদিন আমাকে ভালো-ভালো জিনিস কিনে খাওয়াতো,সব সময় হাজার টাকা নিয়ে ঘুরতো। আমাকে বিয়ে করে সুখে রাখবে বলে আশ্বাস দিতো। ২০০৫ সালের সম্পর্ক ২০০৭ এসে আমরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই। তখন সবেমাত্র আমি ইন্টার পরীক্ষা দিয়েছি। এদিকে মুজিবুর আমাকে বিয়ের জন্য চাপ দেই। আমি মুজিবুরকে অন্ধের মত ভালোবেসে ছিলাম। তাই ২০০৭ সালে ইন্টার পরীক্ষার পর পরিবার তথা বন্ধু-বান্ধব কাউকে না জানিয়েই মুজিবুরের হাত ধরে আমি পালিয়ে যায় চট্টগ্রামে।সেখানে ২নং গেইটে বোডিংয়ে ৭দিন থাকার পর মজিবুরের এক বান্ধবী কল দেয় সেখানে (পাঁচলাইন) যাওয়ার জন্য। আমরা সেখানে গেলাম (২৮ অক্টোবর,২০০৭), গিয়ে এক উকিলের সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয়। উকিলের কথামত আমরা কোর্ট ম্যারেজ করি,আমিও ধর্মান্তরিত হই। আমরা একটি ছোট্ট বাসা নিলাম। মজিবুর তখন সিইপিজেট'এ (ইয়ং ওয়ান) চাকরি করত। সেখানে থাকা অবস্থায় আমাকে প্রায়'শ শারিরীক ও মানসিক টর্চার করত নানা অভিযোগ তুলে।নির্যাতনের মধ্যে থেকে প্রায় ১ বছর চট্টগ্রামে থাকার পর আমাকে বাড়ীতে (মহালছড়িতে) পাঠিয়ে দেয়। কিছুদিন পর মজিবুরও চলে আছে মহালছড়িতে। শুরু হয় আমার উপর মজিবুরের পরিবার কর্তৃক শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন। প্রত্যেকদিন যৌতুকের কথা তুলে আমাকে বকা দিত মুজিবুর ও তার পরিবার। বলতো,মুজিবুর বাঙ্গালী মেয়ে বিয়ে করলে আমরা লাক টাকা পাইতাম,তোমাকে বিয়ে করে কিছুই পেলাম না। বিশেষত্ব মজিবুরের দাদী বেশি এ ব্যাপারে প্রেসার দিত। বাইরের কারোর সাথে মিশতে দিতো না।সারাক্ষন ঘরের ভেতর পরে থাকতে হতো। অসুস্থ হলেও ভালো কোন চিকিৎসা করাত না। পরিবারের (শশুর,শাশুরী,দাদী,ননদ,দেবর ও স্বামী) সবার কাপড়-চোপড় প্রত্যেকদিন ধূয়ে দিতে হতো। পরিবারের সব কাজ আমাকেই করতে হতো।রান্না-বান্না,ঘর মুছা,হাড়ি-পাতিল ও বাসন-কোচন মাজা সহ যাবতীয় কাজ আমাকে একাই করতে হতো।অথচ আমার শাশুরী,ননদ ও দাদীসহ সবাই একটু হলেও সাহায্য করতে পারতো,কারন কেউই বৃদ্ধ নয়। প্রত্যেকদিন শশুর-শাশুরীদেরকে টিউবওয়েল থেকে পানি ডাবিয়ে গোসল করাতে হতো। এর পরেও আমি তাদের চোখে ছিলাম চোখের বিষ। সব সময় বোরকা পড়ে থাকতে হতো। বলতো,বাইরের কোন পুরুষের সামনে গেলে নাকি পাপ হয়। একবার নামায পড়তে দেরি হওয়াই আমার শাশুরী আমার হাত কেটে দিয়েছিল,এই দেখুন (কাটা হাতটি দেখিয়ে)। এরপরেও সবাই বলতো,তোমাদের পাহাড়িরা তো খ্রাপ,তোমাদের বৌদ্ধ ধর্মটা ভালো না ইত্যাদি বলে আমাকে খোচা দিতো। এই ৪ বছর মনে হয়েছিল আমি যেন এক বন্দী দাসী। মনে হয়েছে যেন আমি তাদের টাকায় কেনা গোলাম। কখনও মনে হয়নি যে আমি তাদের বৌ বা তাদের পরিবারের একজন।যখন যার যেটা বলতে ইচ্ছা সেটা বলতো,সেটা করতো। আসলে বাঙ্গালী সমাজে বাঙ্গালী মেয়েদের কোন ব্যক্তি স্বাধীনতা নেই। বন্দী কারাগারের মতন এক দুর্বিষহ জীবন তাদের। জীবনে বাঙ্গালী ছেলে বিয়ে করে কি যে ভূল করেছি তার একমাত্র সাক্ষী আমি নিজেই।
.
এই ভূল থেকে শিক্ষা নিয়ে পাহাড়ি মেয়েদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই_____________আমি যে ভূল করেছি,তোমরা সেই ভূল করোনা। বাঙ্গালী ছেলেদের মিষ্টি কথায় ছলনার প্রেমের ফাঁদে পা দেবে। ওরা টাকা বিলিয়ে আমাদেরকে ভূলায়। প্রকৃত ভালোবাসার মূল্য ওরা দিতে জানেনা। যে কিছু ভালবাসার অভিনয় করবে তা শুধু বিয়ের আগ পর্যন্ত,বিয়ের পর সবি মিথ্যা। তাছাড়া ওদের পরিবার কখনও আমাদেরকে মেনে নেয়না। ওদের সমাজ,ওদের পরিবেশ,ওদের খাবার-দাবার সবকিছু আমাদের জন্য প্রতিকুল যা আমি ভিক্টিম না হলে বুঝতাম না। তাই তোমাদের বলছি,অন্তত তাদের (বাঙ্গালীদের) সাথে সম্পর্কে জড়ানোর আগে ভবিষ্যতের কথা একটু চিন্তা করো। আমার জীবন তো শেষ হয়েছে,আর কারো পাহাড়ি মেয়ের জীবন ও ভবিষ্যৎ যাতে নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে সব মেয়েদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা না খেয়ে উপোস থাকি,তবুও আমাদের জাতের ছেলেরাই বেস্ট,আমাদের স্বাধীনতা ও খাবার-দাবার,আমাদের পরিবেশই আমাদের জন্য স্বর্গ। আর হ্যাঁ একটা কথা মনে রাখতে হবে যে,আমরা যদি এসব কথা বলি_______তাহলে তারা (বাঙ্গালী ছেলেরা) বলে যে,সব বাঙ্গালী ছেলেরাই কিন্তু খ্রাপ নয়।আসলে কিন্তু সবাই খ্রাপ আমাদের পাহাড়ি মেয়েদের বেলায়। তাই আমার মতন ভূল যেন কেউ না করে,যেন কারোর ভবিষ্যৎ আর অন্ধকার না হয় সেজন্যে পাহাড়ি ভাই-বোন সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
.
বিদ্র:-পেইমা মারমার দেয়া এই সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি সম্ভবত ২০১১-২০১২ সালের দিকে প্রকাশ পেয়েছে। তবুও জনস্বার্থে প্রচার করছি ২০১৭ সালে।
পেইমার মত কতো চাকমা,ত্রিপুরা, মারমাসহ অপরাপর জুম্মো জনগোষ্ঠীর মেয়ে যে ভিক্টিম হচ্ছে তার কোন হিসাব আমাদের কাছে নেই।
.
হে জুম্ম মেয়েরা,সচেতন হোন। একটা থ্রি-পিছ,একটা মোবাইল,এক জোড়া জুতা,একটি বডি স্প্রে,কিছু দামী লিপস্টিক,কিছু গিফট ও কয়েকবার দামী রেস্টুরেন্টে গিয়ে চিকেন ফ্রাই,ফুসকা এসবের লোভে পড়ে নিজেকে সেসব শরীর ভোগী "ব" দের নিকট সপে দিয়ে হোটেল কিংবা ভাড়া ভাসায় প্রত্যেকদিনের শয্যাসঙ্গী হয়ে নিজেদের ভভিষ্যৎকে অন্ধকার করোনা,স্ব-ইচ্ছায় বন্দী কারাগারে টর্চার সেলের নিবাসী হতে যেও না,অবশেষে লাশ হয়ে পরিবার কিংবা জাতির নিকট ফিরে এসোনা। একটু বোঝো,তোমরাই পারো জাত কিংবা আমাদের সমাজকে রক্ষা করতে,ধন্যবাদ সবাইকে।


Source Litan Larma Chakma

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য