প্রকাশ : ৮ আগস্ট, ২০১৭ ২০:৩২ অনলাইন ভার্সন
আপডেট :
আপডেট :
পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের আদিবাসী স্বীকৃতির দাবি
ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি
আগামীকাল ৯ আগস্ট। আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস।
পার্বত্যাঞ্চলে ১০ ভাষাভাষী ১১টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি নানা আয়োজনে মধ্যে দিয়ে দিনটি পালন করছে। তবে আদিবাসী হিসাবে আত্মপরিচয়ের সাংবিধানিক স্বীকৃতি না থাকায় নিজেদের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ আর হতাশা। পার্বত্যাঞ্চল বসবাসকারী করে চাকমা, মারমা, খুমী, ম্রো, চাক, বম, খিয়াং, তঞ্চঙ্গ্যা, অহমিয়া, পাংখোয়া ও ত্রিপুরা। এসব সম্প্রদায়কে কেউ বলছে অদিবাসী, আবার কেউ বলছে উপজাতি। তবে সরকার দিয়েছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি। কিন্তু এ পরিচয় মানতে নারাজ এসব সম্প্রদায়ের মানুষগুলো। তাদের একটাই দাবি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হিসাবে নয়, দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোকে দেওয়া হোক আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি এমনটা জানালেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মুখপাত্র সজিব চাকমা।
তথ্য সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর উপজাতিয় জাতিগোষ্ঠীগুলো সরকারের কাছে আদিবাসী স্বীকৃতি পাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু অনেক আন্দোলন, সংগ্রামের পরও বাস্তবায়ন হয়নি তাদের দাবি। অবশেষে ২০১১ সালে ওইসব জাতিগোষ্ঠীকে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে আদিবাসী হিসেবে নয়, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তবে ওই স্বীকৃতি মানতে নারাজ এসব ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা। তাদের দাবি, নিজ নিজ জাতি হিসেবে অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংবিধানে ‘আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি, জাতিগত পরিচয় অন্তর্ভুক্ত, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সাংবিধানিক নিশ্চয়তা, প্রথাগত ভূমির অধিকার ও উপজাতি শরনার্থীদের পুর্ণবাসন।
আদিবাসী ইস্যুকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে নিয়ে নিজেদের আত্মপরিচয়সহ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের চাওয়া পাওয়া ব্যাপারে কাজ করছে সন্তু লারমার নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে আদিবাসী হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়া গেলেও সরকার দিতে চাচ্ছে না বলে অভিযোগ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নেতাদের।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) মুখপাত্র সবিজ চাকমা বলেন, ২০০৭ সালে আদিবাসী অধিকার ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হওয়ার এক দশক হতে যাচ্ছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এ অঞ্চলের মানুষগুলো আদিবাসী স্বীকৃতি পায়নি। তাই পার্বত্যাঞ্চলে সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে পাহাড়ি মানুষদের ভাষা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ভূমি অধিকারও।
অন্যদিকে ক্ষমতাশীল দলের নেতারা বলছে, সরকার সংবিধানের পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত ১০ ভাষাভাষী ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজ নিজ ভাষাগত পরিচয় দেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা করা হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজস্ব ভাষায় পড়ালেখা করার সুযোগও। কিন্তু তারপরও হতাশ এসব জনগোষ্ঠী। মানতে নারাজ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নামের পরিচয়। আন্তর্জাতিকভাবে যেসব কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আদিবাসী শব্দের উৎপত্তি, সেই সব বৈশিষ্ট্যই পার্বত্যাঞ্চলের বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মধ্যে রয়েছে বলে দাবি করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির এ নারী নেত্রী।
অন্যদিকে ক্ষমতাশীল দলের নেতারা বলছে, সরকার সংবিধানের পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত ১০ ভাষাভাষী ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজ নিজ ভাষাগত পরিচয় দেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা করা হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজস্ব ভাষায় পড়ালেখা করার সুযোগও। কিন্তু তারপরও হতাশ এসব জনগোষ্ঠী। মানতে নারাজ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নামের পরিচয়। আন্তর্জাতিকভাবে যেসব কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আদিবাসী শব্দের উৎপত্তি, সেই সব বৈশিষ্ট্যই পার্বত্যাঞ্চলের বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মধ্যে রয়েছে বলে দাবি করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির এ নারী নেত্রী।
এব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি সভাপতি জড়িতা চাকমা বলেন, আমরা যদি আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পায়, তাহলে পাহাড়ের জনগোষ্ঠীরা তাদের অধিকার বাস্তবায়ন করতে পরবে। নিশ্চিত হবে ভূমি ও নিরাপত্তার অধিকারও। তাদের প্রত্যাশা আদিবাসী সংক্রান্ত বিষয়ে জটিলতা কাটিয়ে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ ভূমি বিরোধ নিরসন করে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিদের আত্মপরিচয়ের অধিকার ফিরিয়ে দেবে।
অন্যদিকে পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা আদিবাসী নয় বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাঙালী সংগঠনগুলো। তারা বলেন, আদিবাসী স্বীকৃতি দাবীর আড়ালে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের করছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নেতারা। তারই প্রতিবাদে ৯ আগস্ট সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব ও তিন পার্বত্য জেলায় বিক্ষোভ সামবেশ করবে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ।
বিডি-প্রতিদিন/০৮ আগস্ট, ২০১৭/মাহবুব
Comments