রায় কে লিখে দিয়েছেন জানি, তবে বলব না: লতিফ সিদ্দিকী

সমকাল প্রতিবেদক
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী দাবি করেছেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় কার মদদে হয়েছে,  রায় কে লিখে দিয়েছেন,  এসব তিনি জানেন। কিন্তু বলবেন না। তার ভাষায়-আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব সঠিকভাবে বিষয়টি মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী ছাড়া অন্যরা ষড়যন্ত্রকে উস্কে দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন।

শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে লতিফ সিদ্দিকী এ কথা বলেন। ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন তিনি। তবে সাংবাদিকদের অধিকাংশ প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গেছেন তিনি।

রায়ে সংসদ সদস্যদের ‘অপরিপক্ক’ বলা হয়েছে-এমন দাবি করে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, একজন সাংসদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় না। তবে সংসদ সদস্য হওয়ার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। রায়ে সংসদ সদস্যদের নয়,  সংসদীয় গণতন্ত্রকে অপরিপক্ক বলা হয়েছে- এ বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ৭৯৯ পৃষ্ঠার পুরো রায়টি তিনি তিনবার পড়েছেন। এরপর আইনজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করে নিশ্চিত হয়েছেন।

রায় নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধেরপক্ষশক্তি ও যুদ্ধাপরাধী শক্তি দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন,  আদালেতের আদেশের শ্বব্দচয়ন ও বাক্য গঠনে এমন ভাবনার প্রকাশ পেয়েছে, যা জনগণের সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার এবং পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের সুরের প্রতিধ্বনি। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া প্রতিটি এই ধরনের রায়ের পেছনে মদদদাতা ও শক্তির উৎস ক্যান্টনমেন্ট।

লতিফ সিদ্দিকীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশে এই রায়ের ক্ষেত্রে তিনি কার মদদ দেখছেন। জবাবে তিনি বলেন, 'আমি জানি, বলব না। কে রায় লিখেছে তা-ও আমি জানি, তবে বলব না।'

রায়ের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, 'ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ এবং মতামত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগ¯দ্ব থেকে আজ পর্যন্ত  স্বাধীনতাবিরোধী, বঙ্গবন্ধুবিরোধী শক্তি যত বিরূপ ও কদর্য মন্তব্য করেছে, তার চেয়েও অপকৃষ্ট বলে অনেকেই ক্ষুব্ধ।'

লতিফ সিদ্দিকী বলেন, বিভিন্ন সময়ে বিচারপতিরা জাতীয় সংকটে সুবিধাবাদী ও আপসকামী চরিত্রেরই প্রমাণ রেখেছেন। রায়ে বঙ্গবন্ধু, জাতির জনক বহুবার বলা হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করা হয়েছে।

লতিফ সিদ্দিকী বলেন, 'সংসদ জনগণের দ্বারা নির্বাচিত, তার প্রণীত আইন ও সংশোধনী বাতিল করা যায়, তাদের হাতে বন্দুক নেই। বন্দুক যাদের হাতের মুঠোয়,  তাদের দিকে কলম তাক করা তো দূরের কথা, চোখ তুলে তাকানোর হিম্মত কোনো মাননীয় বিচারক দেখাতে পারেননি।'

লতিফ সিদ্দিকী জানান, একজন নাগরিক হিসেবে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এ সময় তার সঙ্গে সাবেক এমপি ও তার সহধর্মিণী লায়লা সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের ডাক,  টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান লতিফ সিদ্দিকী। যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে ইসলাম ধর্ম ও হজ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। ফলে একই বছরের ১২ অক্টোবর মন্ত্রিসভা থেকে অপসারিত হন এবং ২৪ অক্টোবর তাকে দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়।২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর তিনি সংসদ সদস্য পদ থেকেও পদত্যাগে বাধ্য হন। ওই দিন সংসদের বৈঠকে বক্তব্য দেওয়ার পরে তিনি অনেকটা লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান।শনিবার প্রথমবারের মতো তিনি গণমাধ্যমের সামনে আসেন। 

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য