রোহিঙ্গা সমস্যা কি জাতিগত না ধর্মগত ?

পুর্বের লেখা দুটি থেকে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন যে এই রোহিঙ্গা আসলে কারা ও এদের উৎপত্তি কিভাবে। ইতিহাস যা বলে তা থেকে এটা বোঝা যাচ্ছে যে, রোহিঙ্গা গোষ্ঠী বৃটিশ শাসনামলে জাতীয় তালিকায় নাম না তুলতে পারলেও তারা ভালোভাবেই রাখাইন আর আরাকান অঞ্চল সহ অন্যান্য যায়গায় বসবাস করে আসছিলো। ১৯৬১ সালে মায়ানমারের রাজা বোদাওফায়া রাজ্য দখল করার পর থেকেই শুরু হয় তাদের দুর্দিন। ধীরে ধীরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে দেখা যায় মগ জাতিদের দ্বারা অত্যাচার। আর তা থেকেই রোহিঙ্গারা শুরু করে আন্দোলন। গত ২০ বছরে তা আরো প্রভাব বিস্তার করে। তারা মুসলিম হবার কারনে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ আরো ভালো ভাবে তাদের আন্দোলনে যুক্ত হয়। কারন ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা জিহাদি প্রশিক্ষন ভালো দেওয়া যায়। আরো অনেক কথা আছে যা এখন বলছি না। এখন আসুন এদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কিছু বলা যাক।
এই রোহিঙ্গাদের মূল কথা জানলে কেউ তাদের ভালো বলবে না। তার যথেষ্ট কারন আছে। এদেরকে অশিক্ষিত আর জিহাদি জঙ্গিবাহিনীই বলবে সবাই। যারা হাসতে হাসতে মানুষের দেহকে শত শত খন্ড করে থাকে। তবে মায়ানমার সরকার জঙ্গী দমনের নামে তাদের সাথে কোন অমানবিক আচরন করছে কিনা সেটা দেখার বিষয়। আগের হিসাব বাদ রেখে যদি সাম্প্রতিক ঘটনা গুলির কথা বলি তাহলে গত বৃহস্পতিবার রাতে মিয়ানমারের রাখাইনে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর ওই রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা বলতেই হবে। ওই রাতের পর থেকে এ পর্যন্ত ১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করেছে রহিঙ্গারা এমন খবর বিভিন্ন মিডিয়া দিয়েছে। নিরাপত্তাবাহিনীর উপরে হামলার ফলে রোহিঙ্গা জঙ্গি বাহিনীর প্রতি সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আদেশ পেয়ে মায়ানমার এর সেনা বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন অভিজান চালায়। এসব অভিযান এর অংশ হিসাবে বিভিন্ন রোহিঙ্গা জনবসতি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই সেদেশের সেনা বাহিনী। অভিযানের আওতাধীন কিছু মোষ্ট ওয়ান্টেড গ্রাম ছিলো যেগুলি একেবারেই তুলে না দিলে এই জঙ্গিবাহিনী নির্মুল করা যাবে না বলে মনে করেন সেনাসদস্যরা। তারা আরো মনে করেন এই মুসলিম জঙ্গিবাহিনী জিহাদি মতে তাদের কোরআন বলছে জিহাদ হচ্ছে সকল সমস্যার সমাধান এবং নিশ্চিত জান্নাতে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা। কোরআন এর নির্দেশেই তারা মরে যাওয়ার ভয় ছেড়ে আত্নঘাতি হামলা শুরু করে। সুতরাং এই রোহিঙ্গা জঙ্গিদের থামানো সম্ভব একমাত্র এদের বসতি উচ্ছেদ করে।
এখন আসুন জেনে নেই বাংলাদেশের যারা মানবতা মানবতা করে হাতের মুঠ শক্ত করে খাল কেটে কুমির আনা টাইপের চিন্তা করছে তাদের কথা। গত কয়েক দিন ধরে পালিয়ে আশা রোহিঙ্গাদের মধ্যে অধিকাংশ হচ্ছে নারী আর শিশু। যাদের লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি গতকাল পর্যন্ত বিভিন্ন মিডিয়া গুলি শেয়ার করেছে। এদের জন্য বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থার সদস্যরা সে দেশে পুনর্বাসন কেন্দ্রের ব্যববস্থা করেছে বলে এক বিবৃতিতে জানাই সংবাদ বিবিসি নিউজ। এদিকে সূচি জানিয়েছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নির্মুল করার জন্য যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এতে নারী শিশুদের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে কেন তারা চাইবে বাংলাদেশ এ প্রবেশ করতে। এর পেছনে কিছু কারন আছে। এর আগেও নিশ্চয় খবর পেয়েছেন যে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে পালিয়ে আশেপাশে জংগলে গিয়ে জংগী ট্রেনিং নিচ্ছে।এতেই বোঝা যাচ্ছে যে এদেশেও রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা করার জন্য কিছু সংগঠন আছে। আর তাদের দেশে নিয়ে আসতে বর্ডার এর তার কাটার কাছে যে মুসলিম ৫০ উর্ধো মুসুল্লি গুলা আছে তাদের ললুপ দৃষ্টি রোহিঙ্গা কিশোরী মেয়েগুলির দিকে। তাদেরকে বিয়ে করার নামে ইসলাম আর আল্লাকে ব্যবহার করে তাদের বর্ডার পার করছে। এতে আরো সুবিধা আছে। ইসলাম ধর্মের পুর্বের ইতিহাস ঘটলে দেখা যায় যে উদ্দেশ্য বিনা আরেক জাতের মুসলিমদের কেউ সাহায্য করছে না।
এবার কিছু আন্তর্জাতিক বিষয় শুনুন। এই মুসলিম জাতি জংঙ্গী, সন্ত্রাসী তৈরি করা ছাড়াও আরেকটি জিনিস ভালো পারে তা হচ্ছে মুখ বাবড়ানো। ঠিক বাংলাদেশের মোডারেট মুসলিম গুলার মতো। যারা জানেও না ইসলামের মূল উদ্দেশ্য কি। কোথাও কিছু লেখা দেখলেই ছুটে চলে আসে বাপ দাদার ধর্ম রক্ষা করতে। বিশ্বব্যাপী মুসলামানদের ডায়ালগ এরকম যে সারা বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলাম যদি থুথু দেয় তাহলে ট্রাম্প এর দেশে ভুমিকম্প শুরু হয়ে যাবে আর যদি বিশ্বের সব মুসলিমরা মিলে মুতে দেয় তো রাশিয়া ভেসে যাবে। তাই আমি মুসলিমদের উপর যদি এসব দেশ কোন আক্রমণীয় আচরন করে তবে আমার কষ্ট হয় এই মনে হয় আমেরিকা বা রাশিয়া গেলো মুসলিমদের নিয়ে কোন ভয় হয় না। ভারতের কাশ্মীর এর কথা তুলতেই হয়। এই জঙ্গি দমনে মোদি সরকার সূচির মতো পদক্ষেপ নেই নি বরং তারা বছরে কাশ্মীর এর বর্ডার এর Loc ( Line of control ) ঠিক রাখার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে। ভারতের মানবাধিকার মায়ানমার এর মানবাধিকার থেকে অনেক এগিয়ে। তাই তারা মায়ানমার এর মতো জ্বালাও পোড়াও করে না। আজ বিশ্বব্যাপী ইসলামী সন্ত্রাসীদের কারনেই মায়ানমার এর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর এই অবস্থা। যার আরেকটি প্রমান হচ্ছে কয়েকদিন আগের স্পেনের জংঙ্গী হামলার প্রেক্ষিতে ভেনিসে গতকাল থেকে রাস্তায় আল্লাহু আকবার বলে স্লোগান দেওয়া নিষেধ করা হয়েছে নিরাপত্তার কারনে। একবার চিন্তা করে দেখুন মুসলমানরা তাদের অবস্থান কোথায় নিয়ে এসেছে এসব দেশের মুসলিম সম্পর্কে ধারনা কি। আরো অনেক ঘটনা আছে যা বলতে গেলে অনেক কথা হবে। এসব পর্যালোচনা করে মায়ানমার সরকার বুঝতে পেরেছে যে এই জঙ্গি সন্ত্রাসী গোষ্ঠিকে যদি আরো প্রশ্রয় দেয় তবে তারা এক সময় সম্পুর্ন রাষ্ট্রকে ইসলামিক চাদরে ঢেকে দেবে আর তার পর শুরু করবে আল্লার ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠা করা।
এখন বাংলাদেশের ইসলামিস্ট সব মানবতাবাদীদের কথা শুনেন। তারা দাবী করে যে মায়ানমার এর বৌদ্ধ ও মগ জনগোষ্ঠীর মানুষেরা মুসলিম ভাইদের উপর হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করছে। এসব বিষয়ের কিছু ফেক ছবি আর ভিডিওর কথা আগেই বলেছি। আরাকানের বৌদ্ধরা মুসলিমদের আক্রমণ করছে না তাড়িয়ে দিচ্ছে না কে কাকে হত্যা করছে তা মায়ানমার সরকার এই ইসলামিস্টদের থেকে ভালো যানেন। কিন্তু খোজ নিয়ে জানা গেল এই রোহিঙ্গাদের আক্রমণে মূল বার্মিজ ছাড়াও বহু জাতিগোষ্ঠীর (বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মের) মানুষ রোহিঙ্গা জিহাদীদের হামলার শিকার হয়েছে এবং হচ্ছে! যেকারণে বার্মা সরকার ভিলেজ প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। আচ্ছা বৌদ্ধদের কথা বাদ দিলাম। জিহাদের যুক্তিতে ধরে নিলাম যে তারা সবাই অপরাধী। কিন্তু হিন্দুরা কি করল সেখানে? তাদের উপর কেনো রোহিঙ্গা জেহাদীরা হামলা করছে?
আরেকটা কথা। বার্মায় কেবল রোহিঙ্গারা মুসলমান নয়। আরও অন্য সম্প্রদায় মুসলমাল আছে সেখানে। কিন্তু কেবল এই রোহিঙ্গারাই সমস্যা কেনো সেখানে? এই শান্ত রোহিঙ্গারাই কেনো কক্সবাজারে আনসার ক্যাম্পে হামলা করে আনসার হত্যা ও অস্ত্র লুঠ করে? এই সন্ত্রাসীদের দেশে যারা সমর্থন দিচ্ছে তারা যে ভেতরে ভেতরে জঙ্গীবাদকে সমর্থন করে সেটা স্পষ্ট। তাদের সংখ্যা এখন অনেক। জঙ্গীবাদ বাংলাদেশে সময়ের সাথে সাথে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। জরিপ করলে দেখা যাবে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের সমর্থক সময়ের সাথে সাথে বাড়ছে বৈ কমছে না। এটা শুধু বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি নয়, প্রতিবেশি দেশের জন্যও হুমকি।
Comments