রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী নয়, সীমান্ত খুলে আশ্রয় দিন : আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী

মায়ানমারের আরকানের মুসলমান নারী ও শিশু নির্যাতন এবং নির্বিচারে গণহত্যা বন্ধের দাবী জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বালাদেশ হাটহাজারী শাখার উদ্যেগে এক বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্টিত হয়েছে। গতকাল বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকাল ৩টার দিকে হাটহাজারীর ডাকবাংলো চত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়।
হেফাজত নেতা মাওলানা মীর ইদরীস এর সভাপতিত্বে, মাওলানা মোঃ জাহাঙ্গির আলম মেহেদী ও মাওলানা কামরুল কাসেমীর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। বক্তরা বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর বৌদ্ধসন্ত্রাসী ও সরকারী বাহিনী যৌথভাবে সরাসরি হত্যাকান্ড চালাচ্ছে। বর্তমান হত্যাকান্ড অতীতের যে কোন সময়ের চাইতে মর্মান্তিক। যা বিশ্ব মিডিয়া এড়িয়ে যাচ্ছে । পৈচাশিক আর নির্মমতার কোন নজীর নেই। তারা মুসলমানদের ঘর বাড়ি জ্বলিয়ে দিচ্ছে, নারীদেরকে যৌন নির্যাতন করে হত্যা করছে, মসজিদ ও মাদ্রসা গুলি জ্বালিয়ে দিচ্ছে, শিশুসহ সব বয়সী মানুষদেরকে দা দিয়ে কুপিয়ে মারছে, এমনকি জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করতেছে । এরা সন্ত্রাসী, খুনি, এরা মানবতার শত্রু বলেও মন্তব্য করেন সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে আশা বক্তারা
উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বেই চলছে হত্যাযজ্ঞ, অগ্নিসংযোগ। প্রাণ বাঁচাতে ক্ষুধার্ত রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধরা প্রতিবেশী ভ্রাতপ্রতিম মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার জন্য আকুতি জানাচ্ছে। তিনি জাতিসংঘ, ওআইসি ও ইউরোপিয় ইউনিয়নকে মিয়ানমারের এই সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত নিপীড়ন বন্ধের জন্য জোরালো ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
এদিকে আগামী শুক্রবার জুমা নামাজের পর বাংলাদেশের প্রতিটি মসজিদে মায়ানমারে নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য দোয়া ও বিশেষ মোনাজাতের কর্মসূচি ঘোষনা করেন। যদি আরাকানে মুসলিম গণহত্যা বন্ধ না হয় তাহলে ঈদের পর আমীর আল্লাম শফীসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে মায়ানমার মুখি কঠিন কর্মসূচি দেওয়া হবে।
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আরো বলেন, মায়ানমার থেকে যারা আসছে তারা কোন সন্ত্রাসী নয় তারা শরণার্তী। মানবিক কারণে সীমান্ত খুলেদিন। বাংলাদেশের স্বাধীণতা যুদ্ধের সময় প্রায় ১০ লক্ষ মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল আরাকানের মুসলমানরা। হাজার বছর ধরে রোহিঙ্গা মুসলমানরা আরকানে বসবাস করে আসছে। অথচ সামরিক বাহিনী ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা তাদের সহ্য করতে পারছে না। এদের সাহায্য করুন। তাড়িয়ে দিয়ে আল্লাহর গজব ডেকে আনবে না। সমাবেশে আগত জনতাকে নিজের জান-মাল নিয়ে কঠিন কর্মসূচি পালন করার জন্য প্রস্তুত থাকার আহবান জানান।
উক্ত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, হেফাজতের যুগ্ন মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দীন রুহী, হেফাজত নেতা হাবিবুল্লাহ নদবী, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজি, মাওলানা কাজি শফিউল্লাহ, আবদুর রহমান চৌধুরী, মুফতি সিরাজ উল্লাহ, মাওলানা এনায়েত হোসাইন, মাওলানা আমজাত হোসাইন, মাওলানা জুনায়েদ বিন ইয়াহিয়া, মাওলানা রুহুল আমিন, ফোরকান সিকদার, মাওলানা আবদুর রহিম, হাফেজ আবদুল মাবুদ, মাওলানা তকিউদ্দীন আজিজ প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, আজ রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু মুসলিমরা তাদের অধিকারহারা। তারা নিজের আবাসভূমিতে নিষ্ঠুর ববরতম নির্যাতনের স্বীকার। মানবতাবাদী কোন রাষ্ট্র সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসছে না। বিশ্ববিবেক আজ বড় নিষ্ঠুর। উগ্রজাতীয়তাবাদ আর ক্ষমতালিপ্সা মানুষের পাশবিকতাকে কতটা উসকে দিতে পারে, তারই বাস্তবচিত্র আরাকানের অসহায় মানুষের আর্তচিৎকার। কিভাবে উগ্রসাম্প্রদায়িকতা মানুষকে যে পশুতে পরিণত করে তার নিকৃষ্টতম উদাহরণ আজকের মিয়ানমার। আরকানের অত্যাচারিত মুসলমানদের পাশে দাড়ানো সকল মুসলমানদের ঈমানী ও মানবিক দায়িত্ব।

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা