বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ পাননি ৭০ জন

মুন্না রায়হান

সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সুপারিশ সত্ত্বেও দুই বছরেও খাদ্য পরিদর্শক হিসেবে নিয়োগ পাননি ৩৩তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়া ৭০ জন। অথচ একই বিসিএসে উত্তীর্ণ আরও ৯১২ জন নিয়োগ পেয়েছেন, যাদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নন-ক্যাডার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল পিএসসি। নিয়োগ পেতে খাদ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদফতর ঘুরে ঘুরে সময় কাটছে এই প্রার্থীদের।

২০১৫ সালের ২৬ আগস্ট এই ৭০ জনকে খাদ্য পরিদর্শক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। সূত্র জানায়, পিএসসির সুপারিশের মাত্র ৩৪ দিনের মাথায় সামরিক শাসনামলে করা নিয়োগ বিধিমালা অকার্যকর হয়ে যায়। নতুন নিয়োগবিধি না হওয়ার কারণেই এ নিয়োগ আটকে আছে। তবে এরই মধ্যে ওই ৭০ জনের পুলিশ যাচাই ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা   প্রার্থীরা জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয় নিয়োগবিধি সংশোধনের কথা বলে গত দুই বছর ধরে তাদের ঝুলিয়ে রেখেছে। অথচ পিএসসি তাদের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছিল ২০১৫ সালের ২৬ আগস্ট। আর খাদ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ বিধিমালা বাতিল করা হয় এর ৩৪ দিন পর। তাই সংশোধনীকে কারণ দেখিয়ে তাদের নিয়োগ আটকে রাখা অযৌক্তিক। তারা বলেন, নিয়োগ বিধিমালা না থাকলেও একই সময়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাইফার কর্মকর্তা পদে পিএসসি যাদের সুপারিশ করেছিল, তারা নিয়োগ পেয়েছেন। একই সুপারিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কার্যকর করতে পারলে খাদ্য মন্ত্রণালয় পারবে না কেন?

জানা গেছে, দুই বছরেও নিয়োগ না পাওয়ায় এদের বেশিরভাগেরই সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়স পার হয়ে গেছে। এছাড়া পিএসসি তাদের নিয়োগের সুপারিশ করার কারণে তারা নতুন বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগও হারিয়েছেন। এ অবস্থায় তাদের মধ্যে তীব্র হতাশা বিরাজ করছে। কয়েকজন নিয়োগ প্রার্থী বলেন, নিয়োগ না পেয়ে তারা চরম হতাশার মধ্যে আছেন। পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও দুশ্চিন্তা কাজ করছে। বয়স না থাকায় নতুন করে সরকারি চাকরির চেষ্টাও করতে পারছেন না। ভুক্তভোগীরা দাবি করেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় চাইলেই তাদের নিয়োগ দিতে পারে।

সূত্র জানায়, নিয়োগবিধিকে কারণ দেখিয়ে পিএসসির সুপারিশকৃত ৭০ জনকে পরিদর্শক পদে নিয়োগ না দিলেও খাদ্য অধিদফতরের পদোন্নতি, বদলিসহ কোনো কাজই আটকে নেই। খাদ্য মন্ত্রণালয় গতবছরের ৯ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দিয়ে এক চিঠিতে বলেছে, নিয়োগ বিধিমালা না থাকার অজুহাতে যদি এই প্রার্থীদের চাকরি না দেওয়া হয়, তবে তারা যেমন হতাশ হবেন, তেমনি দেশ মেধাবী কর্মকর্তাদের পাবে না। খাদ্য অধিদপ্তরের পরিদর্শক পদে শূন্যতার কারণে মন্ত্রণালয়েরও সমস্যা হচ্ছে। দীর্ঘসূত্রতা পরিহার করে ওই ৭০ জনকে দ্রুত নিয়োগ দেওয়া উচিত। এ প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, ১৯৮৩ সালে সামরিক শাসনামলে করা নিয়োগ বিধিমালা এখন অকার্যকর। ফলে তাদের নিয়োগ আটকে গেছে। তিনি বলেন, আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব এই ৭০ জনের নিয়োগ হয়ে যাক। এজন্য সম্প্রতি আমি নিজে উদ্যোগী হয়ে আইন সচিবের সাথে কথা বলেছি। আশা করছি, খুব শিগগিরই তাদের নিয়োগ নিয়ে সমস্যার সমাধান হবে।

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য