আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় মেলেনি, বানের জলে ভেসে গেল সোনাভানের ৪ শিশু
কাহারোল (দিনাজপুর) সংবাদদাতা২০ আগষ্ট, ২০১৭ ইং ১৬:৩৫ মিঃ
আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় মেলেনি, বানের জলে ভেসে গেল সোনাভানের ৪ শিশু
ফাইল ছবি
হঠাৎ বন্যায় ডুবে গেছে চারিধার। চার সন্তানের হাত ধরে অসহায় মা ছুটলেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। পৌঁছেছিলেন ঠিক মতোই। কিন্তু মাদ্রাসার সুপারের অবহেলায় আশ্রয়কেন্দ্রেও জুটলো না আশ্রয়। আবার একবুক পানি পাড়ি দিয়ে ফেরার পথেই চারটি সন্তানকেই হারিয়ে ফেললেন মা। বানের জল ভাসিয়ে নিলো সোনাভান খাতুনের চারটি সোনার মুখ!
 
স্মরণকালের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বন্যায় গত সপ্তাহে ডুবে যায় দিনাজপুর জেলার বেশিরভাগই অংশ। সেই সময়ই এই ঘটনা ঘটে জেলার কাহারোল উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ঈশ্বরগ্রামে। এ বিষয়ে ওই চার সন্তানের জননী সোনাভান খাতুন ঈশ্বরগ্রাম দাখিল উলুম মাদ্রাসার সুপার মো. ফানসুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
 
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গত ১৩ আগস্ট বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় বলরামপুর ঈশ্বরগ্রাম দাখিল উলুম মাদ্রাসায় আশ্রয়ের জন্য চার সন্তানকে নিয়ে ছুটে আসেন সোনাভান। শিশুদের মধ্যে দুই কন্যা, এক ছেলে ও দেবরের এক ছেলে ছিল। কিন্তু মাদ্রাসার কক্ষ খোলা না থাকায় আশ্রয় নিতে পারেননি। আশ্রয়কেন্দ্রের নৈশ প্রহরীকে মাদ্রাসার কক্ষ খোলার জন্য অনুরোধ করেন সোনাভান। নৈশ প্রহরী আব্দুর রশিদ মাদ্রাসা সুপার মো. ফানসুর রহমানকে মোবাইল করেন অনুমতির জন্য। মাদ্রাসা সুপার মোবাইলে নৈশ প্রহরীকে কক্ষ না খোলার জন্য নির্দেশ দেন। সোনাভান নিরূপায় হয়ে মাদ্রাসা থেকে ৪ সন্তানকে সাথে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেন। পথিমধ্যেই পানির প্রবল স্রোতে ভেসে যায় মাসহ চারশিশু। মায়ের আর্তনাদে ছুটে আসে এলাকার লোকজন। মাকে উদ্ধার করা গেলেও চার সন্তানকে উদ্ধার করতে পারেননি তারা।
 
পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর চারশিশুর লাশ উদ্ধার করে এলাকাবাসী। এই ঘটনায় গোটা উপজেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।
 
এদিকে ঘটনার পরের দিন সুপার সকাল বেলায় মাদ্রাসায় এসে লোকজনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। এতে উপস্থিত লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ধাওয়া করলে সুপার পালিয়ে যায়। ৪ শিশুর জানাজায় এসে সুপারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আশ্বাস দেন কাহারোল উপজেলা চেয়ারম্যান।
 
আশ্রয় না পাওয়ার অভিযোগ পুরোটা সত্য নয় বলে দাবি করেছেন কাহারোল থানার ওসি মনসুর আলী। তিনি দৈনিক ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘‘ওই মহিলা নিজেই বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। মহিলা বলেন, মরলে বাড়ি গিয়েই মরবো।’’ তবে উনি কেন আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছিলেন? এই প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেননি ওসি মনসুর আলী।
 
ইত্তেফাক/এএম।


Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য