ধর্ষণের শিকার শিক্ষিকার বাড়িতে পুলিশি পাহারা


বরগুনার বেতাগীতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষিকাকে গণধর্ষণের ঘটনায় মামলার ১১ দিন অতিবাহিত হলেও এখনও অধরা রয়েছে তিন জন মূল আসামি। সেই শিক্ষিকার বাড়িতে তিন জন পুলিশ সদস্য পাহারা বসালেও আতংক কাটেনি ভুক্তভোগী পরিবারের। ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত আসামি সুমন বিশ্বাসকে লক্ষীপুর জেলা থেকে গ্রেপ্তার করলেও মূল ৩ আসামি অধরা থাকাকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
অধরা রয়ে যাওয়া আসামিরা হলেন- আবদুল হাকিমের ছেলে রাসেল, দুলালের ছেলে রেজাউল ও কুদ্দুস কাজীর ছেলে সুমন কাজী। মূল আসামি সুমন বিশ্বাসসহ সকলেরই দলীয় কোনো পদ-পদবি না থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক হিসেবে এদের বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে বলে জানা গেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বেতাগী থানার এসআই মোঃ হুমায়ুন কবির আজ রোববার এ প্রতিবেদককে বলেন, গত বৃহস্পতিবার আসামি হাসান রবিউল ও জুয়েল কাজীর ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হলেও এখন পর্যন্ত থানায় আনা হয়নি। প্রধান আসামির রিমান্ড মঞ্জুর হলে আগামীকাল সোমবার একত্রে তাদেরকে মুখোমুখি করা হতে পারে।
ইতোমধ্যে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করলেও মূল আসামি ৩ জন অধরার বিষয়ে জানতে চাইলে বেতাগী থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন-অর-রশিদ বলেন, আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। যে ভাবেই হোক আমরা সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করবো। পরিবারের আতংকের কোনো কারণ নেই। ১৭ আগস্ট ঘটনার পরের দিন থেকেই ২৪ ঘণ্টা পালাক্রমে ৩ সদস্যের পুলিশি পাহাড়া দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মাদকসেবী সুমন থেকে রামদা সুমন হয়ে যাওয়া কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তারে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, সুমন বিশ্বাসের চাচাতো ভাই ইউপি মেম্বার মন্টু বিশ্বাসের ক্যাডার বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠা সুমন বাহিনী বেতাগীর হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলায় এক আতংকের নাম। মেম্বার মন্টু বিশ্বাসেরও দলীয় কোনো পদ-পদবী না থকলেও তিনি আওয়ামী লীগেরই লোক হিসেবে পরিচিত। সুমন বিশ্বাস লক্ষীপুরের শ্বশুড় বাড়ি এলাকায় থাকত। ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনে মন্টু বিশ্বাস। সেই থেকে প্রকাশ্যে রামদা নিয়ে মহড়া দেয় সে। নির্বাচনে স্থানীয় ইউপি মেম্বার মন্টু বিশ্বাসের পক্ষে কাজ করে সুমন। একটি সালিশকে কেন্দ্র করে সুমন ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকানকে হত্যার হুমকি দেয়। একই এলাকার কলেজ ছাত্র ইমন জোমাদ্দারকে বেদম মারধর করার অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে মামলা করতে গেলে প্রাণনাশের হুমকি দেয় সুমন। শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ছেলেকে মরিচের গুরা ছিটিয়ে দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অধরা সহযোগীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় এক কিশোরীকে ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, বিবাহ অনুষ্ঠানে রামদা নিয়ে হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। আর এসব ঘটনার বিচার চাইতেও সাহস পায়নি ভুক্তভোগীরা।
পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন মোকামিয়ার ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার দেলোয়ার হোসেন বলেন, মাস তিনেক আগে তার এলাকায় ফোরকান হোসেনের ছেলে সৌরভকে তুচ্ছ ঘটনার জেরে কুপিয়ে আহত করে সুমন। এত কিছুর পরেও সুমনের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। বর্তমানে ধর্ষণ মামলা ছাড়া একটি মাত্র মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে শিক্ষিকার স্বামী ঘটনার পরের দিনই ভারতে চলে গেছেন। এখন পর্যন্ত স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষিকা। এতে হামলাকারীদের ভয়ে আতংক  এবং সেই সাথে দাম্পত্য জীবন নিয়েও শংকায় রয়েছেন তিনি।

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা