পদ্মার বাঁধের কাজ শেষ না হতেই চার স্থানে ভাঙন
পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীব্র স্রোতে ঢাকার দোহার উপজেলার নয়াবাড়ী ইউনিয়নে ২১৭ কোটি টাকার চলমান পদ্মা বাঁধ প্রকল্পের চারটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
সরেজমিনে বাঁধ প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চলমান বাঁধ প্রকল্পের মধ্যে ধোয়াইর বাজারসহ দুটি স্থানে বাঁধের উপর দিয়ে পানি ঢুকছে। তীব্র স্রোতের কারণে সেখানে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় আতঙ্ক বিরাজ করছে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে। ভাঙন প্রতিরোধে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হোসেন অ্যান্ড সন্সের শ্রমিকরা বালুর বস্তা ফেলে তা প্রতিরোধের চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে পানির গতিবেগ বেশি থাকায় তা ঠেকানো নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বাঁধ এলাকার আলী হোসেন অভিযোগ করেন, বাঁধে বালুর বস্তা ফেলার সময় লেভেল ঠিক না করায় এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বাঁধের উচ্চতা কমপক্ষে আরো তিন-চার ফুট উঁচু করার প্রয়োজন ছিল। মূলত নিচু স্থানগুলো প্লাবিত হয়ে বাঁধের অপর পাশে পানি ঢুকতে শুরু করে। পানি এভাবে বাড়তে থাকলে অবস্থা ভয়াবহ রূপ নেবে। এর মধ্যে আবার বাঁধের ওপর ইট-বালুর ব্যবসা চলছে। ভারী ট্রাকে সেগুলো বহন করার কারণে বাঁধের বিভিন্ন অংশ দেবে গেছে।
নয়বাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ হান্নান বলেন, এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় বালুর বস্তা ফেলে সাময়িকভাবে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাঁধের অপর পাশে ১০০ ফুটের মধ্যে পুকুর, ডোবা, নালা ভরাট করার কথা ছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু বারবার বলার পরও তারা সেটা করেনি। এগুলো ভরাট করা হলে বাঁধের স্থায়িত্ব আরো বৃদ্ধি পেত।
নয়াবাড়ী পদ্মা বাঁধ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হোসেন অ্যান্ড সন্সের সুপারভাইজার আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বাঁধের যে অংশগুলো দিয়ে পানি উঠছে সেগুলো প্রাথমিকভাবে সংস্কারের কাজ চলছে। তবে মূল ডাম্পিঙয়ের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তা ছাড়া প্রকল্পের অধিকাংশ কাজই এখনো বাকি। পুরো কাজ শেষ হলে এমন সমস্যা থাকবে না।
দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম আল-আমিন বলেন, বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে সংস্কারকাজ চলছে।
ইত্তেফাক/জামান
Comments