ফটিকছড়ির ভূজপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্প পাহাড় কেটে মাটি ভরাট!
- Get link
- X
- Other Apps
পরিবেশ আইনে পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ। কিন্তু এসবের তোয়াক্কা না করে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে চলছে পাহাড় কাটা। উপজেলার পশ্চিম ভূজপুর বারেকেরঘোনা এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটি ভরাটের জন্য কাটা হচ্ছে দুটি পাহাড়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বারেকেরঘোনায় ২০০ শতক জমি আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে ভূমিহীনদের জন্য ৪০টি ঘর তৈরি করা হবে। এখন চলছে প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজ।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, যেখানে গুচ্ছগ্রাম (আশ্রয়ণ প্রকল্প) তৈরি করা হবে সেগুলো নাল জমি। কিন্ত এসব নাল জমির আশপাশের জায়গাগুলো পাহাড়-টিলা শ্রেণির। এসব কাটা যাবে না।
উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে বারেকেরঘোনার অবস্থান। ফটিকছড়ি-ভূজপুর সড়ক হয়ে ১২ কিলোমিটার গেলে ভূজপুর বাজার। এরপর বাজার থেকে কাঁচা সড়ক হয়ে আরও আট কিলোমিটার গেলে ওই স্থান। স্থানটির আশপাশে পাহাড় ও টিলা রয়েছে।
গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত স্থানের পাশে দুটি পাহাড়ের অর্ধেক অংশ ইতিমধ্যে কাটা হয়েছে। পাহাড় কেটে অংশগুলো সমতল করে ফেলা হয়েছে। সেখানে মাটি কাটার কাজ করছেন ২০-২২ জন শ্রমিক। কোদাল দিয়ে মাটি কেটে পাশের জমি ভরাট করে উঁচু করা হচ্ছে।
মাটির কাটার ফাঁকে কথা হয় এক শ্রমিকের সঙ্গে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, ভূজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হামিদের নির্দেশে এসব মাটি কাটা হচ্ছে। তিনি এখানে একজন মাঝি (শ্রমিকদের প্রধান) ঠিক করেছেন। দৈনিক হিসেবে তাঁরা কাজ করছেন। দিন শেষে পারিশ্রমিক পান।
জানতে চাইলে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকার সময় প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। এখন তিনি মাটি ভরাটের কাজ করছেন। সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্যই পাহাড় কাটা হচ্ছে। এ জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। প্রকল্পের মাটি ভরাটের জন্য ১৪৯ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দিয়েছেন। খাদ্যশস্য বিক্রির টাকার বিনিময়ে সেখানে পাহাড় কেটে নিচু জায়গা সমান করা হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মাটি কাটা হয়। প্রায় কয়েক মাস থেকে পাহাড় কেটে মাটি সরানো হচ্ছে। এলাকার লোকজন মৌখিক বাধা দিলেও কোনো কাজ হয়নি। বর্তমানে দুটি পাহাড়ের প্রায় অর্ধেক সাবাড় হয়ে গেছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, সেখানে পাহাড় কেটে জমি ভরাটের নির্দেশনা নেই। বাইরে থেকে মাটি এনে ভরাটের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. মাসুদ করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কার্যালয় থেকে পাহাড় কাটার কোনো ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
- Get link
- X
- Other Apps
Comments