খাতা মূল্যায়নে নয়া পদ্ধতি, কমেছে পাসের হার
ইংরেজি ও গণিতে ফেল বেশি
ইত্তেফাক রিপোর্ট০৫ মে, ২০১৭ ইং
এবার এসএসসি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতিতে আনা হয়েছিল পরিবর্তন। কোন প্রশ্নের কোন উত্তর হবে তার একটি মডেল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। আর এই মডেলের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষকরা নম্বর দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেছেন সঠিকভাবে খাতা মূল্যায়নের কারণেই পাসের হার কমেছে। তবে এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অভিভাবকদের। বারবার পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তনে শিক্ষার্থীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

উল্লেখ্য এবার এসএসসিতে পাসের হার গত ৬ বছরের চেয়ে কম। এবার সার্বিক পাসের হার ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ২০১১ সালে পাসের হার ছিল ৮২ দশমিক ৩১ শতাংশ।  এরপর ২০১২ সালে ৮৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ, ২০১৩ সালে ৮৯ দশমিক ০৩ শতাংশ, ২০১৪ সালে ৯১ দশমিক ৩৪ শতাংশ, ২০১৫ সালে ৮৭ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ এবং গত বছর পাসের হার ছিল ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। সবচেয়ে খারাপ করেছে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড। এই বোর্ডে পাসের হার ৫৯ দশমিক ০৩ শতাংশ।

পাসের হার কমার চিত্র তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন,  আমাদের কাছে এটা খুবই স্বাভাবিক, আমরা এ তথ্য জানার জন্য প্রস্তুতও ছিলাম। যেহেতু এটা একটা আমাদের অগ্রগতি সেই কারণে বিষয়টা আমি সবাইকে স্বাভাবিকভাবে নিতে অনুরোধ জানাব। মন্ত্রী বলেন, খাতা যথাযথ মূল্যায়ন হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পাসের হার কম হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, যথাযথভাবে যেন মূল্যায়ন হয় শিক্ষার্থীদের।

খাতা মূল্যায়নের পদ্ধতি খুবই ত্রুটিপূর্ণ ছিল জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এর ফলে সত্যিকার অর্থে খাতা মূল্যায়ন হয় না। আমরা কিছুটা শিক্ষকের ইচ্ছার উপর নির্ভর করেই খাতা মূল্যায়ন করি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যিনি খাতা দেখেন, তিনি ভালো করে দেখেন না। বোঝা যায়, অনেক সময় তিনি এটা ওজন করে দিয়ে দিলেন, কত পাতা লিখেছে সেই হিসেবে। তিনি বলেন, এটা থেকে বেরিয়ে আসতে আমরা প্রধান পরীক্ষকদের ওই মূল্যায়নের ভিত্তিতে প্রস্তুত করেছি, একটা ট্রেনিংও দিয়েছি। তাদের অধীনে যে পরীক্ষক তাদেরও সংক্ষিপ্ত ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এবার সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে খাতা দেখে আমরা ফলাফল আনতে পেরেছি। এতে ছেলেমেয়েরা আরও সিরিয়াস হবে। শিক্ষকরাও খাতা দেখা এবং পড়ানোর ক্ষেত্রে সিরিয়াস হবেন এবং এখানে আমরা সঠিক বাস্তবতা দেখতে পাব।

কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে এবার পাসের হার ৫৯ দশমিক ০৩ শতাংশ। কেন পাসের হার কম এমন প্রশ্নের জবাবে বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল খালেক বলেন, এ বোর্ডে এবার ইংরেজিতে ২৫ হাজার ৬০৬ জন পরীক্ষার্থী ফেল করে। এ ছাড়া গণিতে ফেল করে ৩৪ হাজার ৯৮৯ জন। কেন পাসের হার কমলো এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এ বোর্ডে মানবিকে ৪১ শতাংশ এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৫৬ শতাংশ পাস করে।

কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এবার পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে কঠোরভাবে শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করেছেন। এ কারণে পাসের হার কমেছে বলে মনে করেন এই শিক্ষক।

মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম ছায়েফ উল্ল্যা বলেন, এবার ইংরেজি ও গণিতে শিক্ষার্থীরা ভালো করতে পারেনি। এ কারণে সার্বিক ফল খারাপ হয়েছে। তিনি বলেন, মাদ্রাসায় ইংরেজি ও গণিতে শিক্ষক দৈন্যতা রয়েছে। এ ছাড়া খাতা মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতিতো আছেই। সব বোর্ডেই ইংরেজি ও গণিতে পাসের হার কম এমনটি জানিয়েছেন শিক্ষাবোর্ডগুলোর কর্মকর্তারা।

Comments

Popular posts from this blog

অবিবাহিত মেয়ের বুকে দুধ, এই ভিডিওটি অবশ্যই একা একা দেখবেন !

টুইন টাওয়ারে ৯/১১ জঙ্গি হামলার ৫টি 'চমকপ্রদ' তথ্য

তৈরি করুন শীতের ভাপা পিঠা