স্ত্রী সন্তানের সঙ্গে আর দেখা হলো না ইউসুফের

নিহত আলী মো. ইউসুফ ও তার সন্তান ইশা।ছবি: ইত্তেফাক
স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে আর বাড়ি ফেরা হলোনা আলী মো. ইউসুফের। স্ত্রী সন্তানের কাছে পৌঁছানোর আগেই তিনি ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম এ যুবককে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে তার পরিবার। নিহত ইউসুফ হবিগঞ্জের আনোয়ারপুর এলাকার বাসিন্দা মো. হাসান আলীর ছেলে। মঙ্গলবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলস্টেশনে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে মারা যান তিনি।
নিহত ইউসুফের প্রতিবেশী মো. জয়নাল মিয়া জানান, কয়েক বছর পূর্বে ইউসুফ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও গ্রামের চিশতিয়া বেগমকে বিয়ে করেন। তার স্ত্রী চট্টগ্রামে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে চাকরি করছেন। তাদের ইশা বেগম নামে দেড় বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। আর ইউসুফ হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজ থেকে ২০১৫ সালে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মাস্টার্স শেষ করে লিটল ফ্লাওয়ার কিন্ডারগার্টেন নামে একটি স্কুল পরিচালনা করছেন। স্কুলটির অধ্যক্ষের দায়িত্বও তিনি পালন করছিলেন। প্রায়ই তিনি স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে চট্টগ্রামে যাতায়াত করতেন। মঙ্গলবার উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনযোগে স্ত্রী ও সন্তানকে আনতে চট্টগ্রামে রওয়ানা হন। পথে ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যান ইউসুফ।
তিন ভাই বোনের মধ্যে ইউসুফ তৃতীয়। ২০১১ সালের জুনে মারা গেছেন তার বাবা। আর ২০১৭ সালের মার্চে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তার বড় ভাই মো. উসমান গনি। এরপর তিনি ধরেছিলেন সংসারের হাল।
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রুবেল চৌধুরী জানান, ইউসুফ জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন। স্ত্রী চট্টগ্রামে চাকরি করার সুবাধে প্রায়ই সেখানে যাতায়াত করতেন স্ত্রী সন্তানকে দেখার জন্য।
তিনি আরও বলেন, বাবা ও ভাই না থাকার কারণে পরিবারের হাল ধরেছিলেন। লিটল ফ্লাওয়ার কিন্ডার গার্টেন নামে একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন।
প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় মঙ্গলবার ভোরে আন্ত:নগর ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও চট্টগ্রামগামী আন্ত:নগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ১৫ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।
ইত্তেফাক/এএএম
Comments